ছবিটি শাটারস্টক থেকে নেওয়া।
আমেরিকা যা করতে পারেনি, ভারত তা করে ফেলেছে নেট নিউট্রালিটি নিয়ে। ১০ জুলাই টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই) নতুন নিয়ম চালুর ঘোষণা করে দিল।
এই নেট নিউট্রালিটি কী?
ধরে নিন, আপনার ফোনে আমাজন, ফ্লিপকার্ট এবং স্ন্যাপডিল রয়েছে। আপনি যখনই কিছু কিনবেন ঠিক করেন, এই তিনটে অ্যাপ-এর মধ্যে অ্যামাজন সব থেকে তাড়াতাড়ি কাজ করে, বাকি দুটো খুলতেই অনেক সময় চলে যায়। কাজেই আপনি অ্যামাজন থেকেই কেনাকাটা করেন। যে আইএসপি বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আপনাকে ইন্টারনেট দিচ্ছে, তারা কারচুপি করে কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে বাড়িয়ে আপনার ব্যবহারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এ ছাড়াও সেট টপ বাক্স টিভির মতো খেলার ওয়েবসাইট, অনলাইন সিনেমা-সিরিয়াল দেখার জন্য আলাদা আলাদা করে দাম ঠিক করা— এ রকম হাজারও বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে তৈরি হয় এই নেট নিউট্রালিটি।
ভারতে এই নিয়ে ছোট-বড় আন্দোলন শুরু হয় বছর দুই আগেই। সবার জন্য সমান ইন্টারনেট— এই ছিল দাবি। ট্রাই এই দাবিকে সমর্থন করে গত বছরের নভেম্বরে কমিশনকে তাদের সমীক্ষা এবং নেট নিউট্রালিটি-কে সুপারিশ করে। তার ছ’মাস পর, সরকারি ভাবে গত ১০ জুলাই এই ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: পিডিপি ভাঙার চেষ্টা হলে ফল ভয়ঙ্কর হবে, বিজেপি’কে হুমকি মেহবুবা মুফতির
এই ঘোষণার ফলে সাধারণ মানুষের বেশ সুবিধা হবে। গ্রাম-পঞ্চায়েতে ১২.৫ লক্ষ ওয়াইফাই লাগানো হবে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে। প্রতিটি মানুষ যাতে হাইস্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে পারেন তার জন্য অন্তত ৫০ মেগাবিট গতির ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে প্রত্যেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আর কোনও রকম কারচুপি, ব্যান বা বিভিন্ন স্পিডের জোন তৈরি করতে পারবে না, ইন্টারনেট যথার্থই মুক্ত এ বারে।
আশা করা হচ্ছে এর ফলে শুধু ব্যবহারকারীদের নয়, আরও অনেক ক্ষেত্রে সুবিধে বাড়বে। প্রায় ৬.৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ, ৪০ লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে ২০২২-এর মধ্যে। নিয়মভঙ্গকারী সংস্থাকে দৈনিক ৫০,০০০ টাকা অবধি জরিমানা করা হতে পারে। এককালীন সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা অবধি জরিমানা হতে পারে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে।
আরও পড়ুন: প্রশিক্ষকের ধাক্কা, ক্যামেরার সামনেই ছাত্রীর মৃত্যু
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই নেট নিউট্রালিটি নিয়ে একাধিক বার আন্দোলন হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ ইন্টারনেট পরিষেবা যথার্থ মূল্যে পেয়ে থাকেন। কোনও রকম অন্যায় নিয়ম যেন চাপিয়ে না দেওয়া হয়। তার পরেও আমেরিকার মতো দেশে এখন বিভিন্ন ওয়েবসাইট দেখার জন্য একাধিক রকমের মাশুল জারি হয়েছে। ভারত সে দিক থেকে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ করেছে এই বিষয়ে। দেখা যাক, আগামী দিনে তা কতটা উপকার করে ব্যবহারকারীদের।