ধর্মভিত্তিক জনগণনা রিপোর্টকে হাতিয়ার করে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সুর চড়াল সঙ্ঘের কট্টর হিন্দুত্ববাদী অংশ। অন্য দিকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলে ভারসাম্যের সুর বজায় রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিজেপি-সঙ্ঘ বৈঠকের আজ দ্বিতীয় দিন। গোড়া থেকেই তাতে উপস্থিত রয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। আগামিকাল যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এই বৈঠকে জাতিভিত্তিক সংরক্ষণ, ধর্মভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট ও জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়ার মতো কট্টর নেতারা। সদ্য প্রকাশিত ধর্মভিত্তিক জনগণনার রিপোর্টকে হাতিয়ার করে খুলেছেন তোগাড়িয়ার দাবি, ‘‘জনসংখ্যা বাড়ানোর জেহাদে’’ সামিল হয়েছেন সংখ্যালঘুরা। ফলে, হিন্দুরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারেন।
তোগাড়িয়ার মতে, দু’টির বেশি সন্তান হলে সংখ্যালঘুদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাপের পরোয়া করলে চলবে না। নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়াতেই সঙ্ঘের একাংশ কট্টর অবস্থান নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে আপাতত সরকার যে অবস্থান বদলাচ্ছে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আজই হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে মোদী জানান, যে কোনও সমস্যার সমাধানের পথ আলোচনা। যে মতবাদ আলোচনার পথ বন্ধ করে দেয় সেখানেই হিংসার সম্ভাবনা বেশি। মোদীর মতে, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মকে দর্শনও বলা যেতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বের বিভিন্ন অংশে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভূত শক্তি নিরীহ মানুষের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। সংঘর্ষ থামানোর প্রচলিত উপায়গুলির সীমাবদ্ধতাও বোঝা যাচ্ছে। তাই বিশ্বের অনেক দেশই বৌদ্ধ ধর্মের দিকে ঝুঁকছে।’’ মোদীর মতে, আগে সামরিক শক্তিই ছিল ক্ষমতার সবচেয়ে বড় প্রতীক। এখন ভাবনা ও আলোচনার মাধ্যমেই ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে হবে।
বিজেপি সূত্রের মতে, সঙ্ঘ নানা ক্ষেত্রে তাদের কট্টর অবস্থানের কথা জানালেও সরকার সে পথে হাঁটতে নারাজ। তবে জাতীয় নিরাপত্তা, শিক্ষা, আদিবাসী উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্র কী ভাবে কাজ করছে তা সঙ্ঘকে জানানো হয়েছে।