নাগা জঙ্গি আন্দোলনের পুরোধা তথা ইন্দো-নাগা চুক্তির অন্যতম রূপকার আইজ্যাক চিসি সুয়ের দেহ ফিরল নাগাল্যান্ডে। শোকপ্রকাশে আজ রাজ্যজুড়ে নাগা পতাকা ছিল অর্ধনমিত। বন্ধ ছিল দোকান-বাজার। সরকারি-বেসরকারি দফতরে ছিল অঘোষিত ছুটি। মণিপুরের নাগা অধ্যূষিত জেলাগুলির ছবিও ছিল এমনই।
দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২৮ জুন দিল্লির হাসপাতালে মারা যান ৮৫ বছরের সু। গত কাল দিল্লিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পরে এ দিন বিশেষ বিমানে তাঁর দেহ ডিমাপুরে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে বিরাট কনভয়ে এনএসসিএন আই-এম প্রয়াত চেয়ারম্যানের দেহ পৌঁছয় ওই সংগঠনের সদর দফতর হেব্রনে। ৩০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে ছিল অজস্র মানুষের ভিড়। আগামী কাল তাঁর দেহ জুনেবটোয় নিয়ে যাওয়া হবে। সংগ্রামের সময় নাগাল্যান্ড ছেড়ে যাওয়া সু পাঁচ দশক পর ২০১২ সালে নিজের গ্রামে ফিরেছিলেন। সেই চিসিলিমি গ্রামে শনিবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং, সাংসদ নেফিয়ু রিও, নাগা হো হো, নাগা ছাত্র সংগঠন, নাগা মাদার্স অ্যাসোসিয়েশন। দিল্লিতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, আই-এম সংগঠনের সাধারণ সম্পাদর থুইংলেং মুইভা, নাগা শান্তি আলোচনার বর্তমান মধ্যস্থতাকারী তথা জয়েন্ট ইনটেলিজেন্স কমিটির চেয়ারম্যান আর এন রবি, সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও। দু’বছরের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে রবি বলেন, ‘‘সু ছিলেন নাগাল্যান্ডের মহাত্মা। ধর্মবোধ ও রাষ্ট্রচেতনায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার।’’ এক সময়ের 'শত্রু' খাপলাংও সুয়ের মৃত্যুতে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন।
এনএসসিএন কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়ে সুকে সমাধিস্থ করার সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা ও ‘গান স্যালুট’-এর অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, ক্যাম্প হেব্রনে গান স্যালুট দিলেও সরকার স্বীকৃত শিবিরের বাইরে চিসিলিমি গ্রামে জঙ্গি বাহিনীর প্রকাশ্যে গান স্যালুট দেওয়া ও অস্ত্র নিয়ে মিছিলে সমস্যা হতে পারে।
এ দিকে সুয়ের মৃত্যুর পরে আই-এম বাহিনীতে নাগাল্যান্ডের নাগা নেতার স্থান শূন্য। ভারসাম্য রাখতে সম্ভবত খোলি কন্যাককেই সভাপতি করা হবে। কারণ,
মুইভা মণিপুরের টাংখুল নাগা। টাংখুলদের নাগারা পুরোপুরি নাগা হিসেবে মানে না।