প্রতীকী ছবি।
জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় সুঞ্জওয়ানের সেনা শিবিরে জঙ্গি হামলা নিয়ে আঙুল উঠল রোহিঙ্গাদের দিকে। সেইসঙ্গে শোনা গেল পাকিস্তানপন্থী স্লোগানও।
আজ অধিবেশনের গোড়া থেকেই আবহাওয়া তপ্ত ছিল সেনা শিবিরে হামলা নিয়ে। স্পিকার কবীন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘ওই এলাকায় আমি থাকতাম। ওখানে অনেক রোহিঙ্গা এসে রয়েছে। তার ফলেই সেনা শিবিরে হামলা হয়েছে।’’ স্পিকারের এই মন্তব্যে বিধানসভায় গোলমাল শুরু হয়। স্পিকার অবশ্য নিজের মন্তব্যে অনড় থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘রোহিঙ্গা আর বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ার জন্য যে রাজ্যে গোলমাল হচ্ছে সে কথা সরকারও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে।’’ শোরগোলের চোটে মিনিট পনেরো অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়।
অধিবেশন ফের শুরু হওয়ার পরে ন্যাশনাল কনফারেন্সের আলি মহম্মদ সাগর, কংগ্রেসের উসমান মাজিদ, সিপিএমের এম ওয়াই তারিগামির মতো নেতারা হামলার নিন্দা করেন। এর পরে রবীন্দ্র রায়নার নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কেরা পাকিস্তান-বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পাল্টা পাকিস্তানপন্থী স্লোগান দেন ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়ক মহম্মদ আকবর লোন। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রথমে এক জন মুসলিম। তাই পাকিস্তান-বিরোধী স্লোগান শুনে চুপ করে থাকতে পারিনি।’’ ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ওমর আবদুল্লা অবশ্য এই মন্তব্য নিয়ে লোনের পাশে দাঁড়াননি। টুইটারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘স্লোগানবাজি ছেড়ে সুঞ্জওয়ানের ঘটনার উপরে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’ আরও সুর চড়িয়ে ওমরের বাবা ফারুক আবদুল্লার বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তান জঙ্গি পাঠানো বন্ধ না করলে ভারত যুদ্ধের পথেও হাঁটতে পারে।’’ ঘটনার নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও।
বিরোধীদের দাবি মেনে স্পিকার কবীন্দ্র গুপ্ত রোহিঙ্গাদের নিয়ে নিজের বিতর্কিত মন্তব্য রেকর্ড থেকে বাদ দেন। রাজনীতিকদের মতে, বিজেপি ও পিডিপির সম্পর্কে এমনিতেই চিড় ধরেছে। এই পরিস্থিতিতে উগ্র জাতীয়তাবাদের সুর তুলে বিজেপি রাজ্যে আরও জমি দখল করতে চাইছে। আজ সুঞ্জওয়ানের সেনা শিবিরের বাইরেও হাজির হন বিজেপি ও বজরঙ্গ দলের সমর্থকেরা। পাল্টা সুর চড়াচ্ছে ন্যাশনাল কনফারেন্সও। ফলে ক্রমশ চরমপন্থী মনোভাব বাড়ছে রাজ্যের রাজনীতিতে।