Hemant Soren

বেনজির? ইডি হেফাজতে থেকেই বিধানসভায় ভাষণ হেমন্তের! দাবি, গ্রেফতারে ‘হাত’ আছে রাজভবনেরও

দেশের রাজনীতির ইতিহাসে কোনও রাজনীতিক হেফাজতে থাকাকালীন আইনসভায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছেন, তা স্মরণ করতে পারছেন না রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৮
Share:

হেমন্ত সোরেন। সোমবার ঝাড়খণ্ড বিধানসভায়। ছবি: পিটিআই।

জমি সংক্রান্ত মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির হেফাজতেই ছিলেন ঝাড়খণ্ডের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। গত শুক্রবার রাঁচীর বিশেষ অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) আদালত জেএমএম নেতাকে পাঁচ দিনের ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। শনিবার হেমন্তের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁকে সোমবারের আস্থাভোটে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত। তাঁর দলের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে এ দিন বিধানসভায় যান হেমন্ত। বিতর্কে অংশ নিয়ে গ্রেফতারির নেপথ্যে রাজভবনেরও হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে কোনও রাজনীতিক হেফাজতে থাকাকালীন আইনসভায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছেন, তা স্মরণ করতে পারছেন না রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই।

Advertisement

সে দিক থেকে দেখতে গেলে সোমবার দুপুরে বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল কেবল ঝাড়খণ্ড নয়, গোটা দেশ। এ দিন রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের ভাষণ দিয়ে শুরু হয় বিধানসভার অধিবেশন। বক্তব্য রাখেন হেমন্তের গ্রেফতারির পর দল এবং সরকারের দায়িত্ব সামলানো ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেন। তার পরই বক্তব্য রাখতে ওঠেন শিবু সোরেনের পুত্র। নিজের বক্তব্যে হেমন্ত এক দিকে যেমন ইডি এবং বিজেপিকে তোপ দেগেছেন, তেমনই আদিবাসী আবেগেও শান দিতে চেয়েছেন।

হেমন্ত বলেন, “৩১ জানুয়ারি রাতে দেশে প্রথম বার এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হল। তার পরই তাঁর সংযোজন, “আমি বিশ্বাস করি রাজভবন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।” সরাসরি নাম না করা হলেও মনে করা হচ্ছে, তাঁর গ্রেফতারির জন্য রাজ্যপালকেই দায়ী করলেন হেমন্ত। বিজেপিকে তোপ দেখে তিনি বলেন, “যদি তাদের সাহস থাকে, তবে যে জমিতে আমার নাম নথিভুক্ত হয়েছে, তার নথি দেখাক। যদি (দুর্নীতি) প্রমাণিত হয়, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।”

Advertisement

আদিবাসীদের উপর কোনও অত্যাচার এবং অপমান তিনি সহ্য করবেন না বলেও জানিয়ে দেন হেমন্ত। তাঁর কথায়, “এরা ভাবে, আমাকে জেলে ভরে উদ্দেশ্য সফল হবে। এটা ঝাড়খণ্ড। দেশের এমন রাজ্য, যার প্রতি কোণে আদিবাসী, দলিতেরা আছেন। রক্তের বিনিময়ে তাঁরা লড়াই করেছেন। আদিবাসীদের জোর এত কম নয়। তিনি না কেঁদে কান্না জমিয়ে রাখছেন বলেও দাবি করেছেন হেমন্ত। তিনি বলেন, “এদের কাছে আদিবাসীদের চোখের জলের কোনও দাম নেই।” রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে নিজের আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক সুরক্ষিত রাখতেই জোরালো এই বার্তা দিলেন হেমন্ত।

জমি জালিয়াতি মামলায় হেমন্তকে গ্রেফতার করেছে ইডি। বুধবার দুপুর থেকে প্রায় সাত ঘণ্টা তাঁর রাঁচীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। রাতে গ্রেফতার হন হেমন্ত। তার আগেই রাজভবনে গিয়ে তিনি ইস্তফা দেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে। গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন হেমন্ত। শীর্ষ আদালত মামলাটি হাই কোর্টে ফেরত পাঠিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন