জয়রাম রমেশ
অস্তিত্বের সঙ্কটে কংগ্রেস, এমন মন্তব্য করে দলের কোপে পড়লেন জয়রাম রমেশ। যদিও কংগ্রেসেরই অনেকে ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন, জয়রামের কথা উড়িয়ে দেওয়ার নয়। এ নিয়ে ভাবা উচিত রাহুল গাঁধীর।
আজই সন্ধ্যায় সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে অসুস্থতার জন্য রাহুল গাঁধী উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু রমেশের গতকালের মন্তব্য নিয়ে আজ দিনভর কংগ্রেস শিবিরে চলল জোর আলোচনা। আর রমেশের কথাকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসকে বিঁধতে আসরে নামল বিজেপি।
গতকাল সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়রাম বলেন, ‘‘সাম্রাজ্য গিয়েছে, কিন্তু এখনও অনেকে সুলতানের মতো ব্যবহার করেন। অস্তিত্বের সঙ্কট চলছে কংগ্রেসে।’’ রমেশের মতে, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের ভাবনাকে মোকাবিলা করতে না পারলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে দল। পুরনো স্লোগান, মন্ত্র, সমীকরণে আর কাজ দেবে না। দেশ বদলেছে, কংগ্রেসেরও বদল দরকার।’’
আরও পড়ুন: দিনভর নাটক শেষে জয় হল পটেলরই
রমেশের এই কথা সরাসরি খারিজ করে আজ এআইসিসির মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বটে, কিন্তু অস্তিত্বের সঙ্কট নেই। সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে দলের নীতি আরও জোরালো হচ্ছে। জয়রাম রমেশের ব্যক্তিগত মতের সঙ্গে দল একমত নয়।’’ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, ‘‘এ কথা জয়রাম দলের মধ্যে বলতে পারতেন।’’ দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতও বলেন, ‘‘জয়রাম যে সব সুলতানের কথা বলেছেন, তিনিও তাঁদের মধ্যে এক জন। এত বছরের পুরনো দল কংগ্রেসকে আদৌ উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’
ঘরোয়া আলোচনায় অনেক কংগ্রেস নেতার মত, রাজ্যসভার আসন পাকা হওয়ার আগে জয়রাম আনুগত্য দেখাতেন। এখন সেটি হয়ে যাওয়ার পর গর্জে উঠছেন। আর বিজেপির সুবিধে করছেন। কংগ্রেসের ভিতরে অনেক বেশি গণতন্ত্র আছে বলেই যে কেউ যা খুশি বলতে পারেন। কিন্তু দলের অন্য এক অংশ মনে করে, জয়রামের মন্তব্য অনেকেরই মনের কথা। রাহুল গাঁধীদের সে বিষয়ে ভাবা উচিত। মণিশঙ্কর আইয়ার খোলাখুলিই বলেন, ‘‘জয়রাম যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাতে স্পষ্ট তিনি কট্টর কংগ্রেসি। বিভিন্ন মত না শুনলে আবার এগোনোও যাবে না।’’
এ সবের মধ্যে জয়রাম আজ এই নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দিনভর বিজেপি এটিকে পুঁজি করেই বিঁধল কংগ্রেসকে। এমনকী গুজরাতে রাত পর্যন্ত রাজ্যসভা ভোট নিয়ে প্রবল টানাপড়েনের মধ্যেও বিজেপি নেতারা বলেন, সাম্রাজ্য চলে যাওয়ার পরে হতাশায় ভুগছে কংগ্রেস।