রাহুল-ওলাঁদ যুগলবন্দির সম্ভাবনা রয়েছে, ইঙ্গিত জেটলির

রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি নিয়ে প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেছেন রাহুল গাঁধী। তাঁর ব্যাখ্যা, মোদীকে আসলে ‘চোর’ বলেছেন ওলাঁদ।

Advertisement

নয়াদিল্লি

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি নিয়ে প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেছেন রাহুল গাঁধী। তাঁর ব্যাখ্যা, মোদীকে আসলে ‘চোর’ বলেছেন ওলাঁদ। আজ তার জবাবে রাহুলকে পাল্টা আক্রমণ করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর দাবি, ওলাঁদ দু’বার সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলেছেন। পাশাপাশি রাহুলের সঙ্গে ওলাঁদের ‘যুগলবন্দি’র সম্ভাবনা রয়েছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। জবাবে রাহুলের দাবি, মিথ্যে বলা বন্ধ করে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত শুরুর ব্যবস্থা করুক সরকার। কংগ্রেসের আরও দাবি, অনিল অম্বানীর কাছে রাফাল কেনা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথের শর্ত ভেঙেছেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

ওলাঁদের বক্তব্য নিয়ে ভারতে তুমুল রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই কূটনীতির ক্ষেত্রে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনাচক্রে এ দিনই ফরাসি বিদেশ প্রতিমন্ত্রী জঁ বাপতিস্ত লেময়েন বলেছেন, ‘‘ওলাঁদের বক্তব্যের ফলে ভারত-ফ্রান্স সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।’’

ওলাঁদ প্রথমে জানান, নরেন্দ্র মোদী সরকারই অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্সকে রাফালে অংশীদার করতে চাপ দিয়েছিল। স্বভাবতই এতে বিরোধীদের আক্রমণ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। রাহুল দাবি করেন, ওলাঁদের মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে রাফাল নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট মোদীকে ‘চোর’ বলেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। এর পরে ফরাসি সরকার এবং রাফালের নির্মাতা ড্যাসো বিবৃতি দিয়ে জানায়, রিলায়্যান্সকে অংশীদার হিসেবে নির্বাচন করেছিল ড্যাসোই। এতে ফরাসি বা ভারত সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। ওলাঁদও সুর নরম করে বলেন, ‘‘রিলায়্যান্সকে অংশীদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ড্যাসোই।’’

Advertisement

আজ জেটলি বলেন, ‘‘৩০ অগস্ট রাহুল বলেছিলেন, ফ্রান্সে রাফাল নিয়ে বোমা ফাটবে। তার পরে ওলাঁদ মন্তব্য করলেন। আমি জানি না, এই দু’জনের মধ্যে কোনও যুগলবন্দি আছে কি না। তবে এমন একটা সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।’’

জেটলির মতে, ওলাঁদের দ্বিতীয় মন্তব্য তাঁর প্রথম মন্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। ফরাসি সরকার জানিয়েছে, অংশীদার স্থির করার এক্তিয়ার সংশ্লিষ্ট সংস্থার। ড্যাসোও জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন সংস্থাকে অং‌শীদার হিসেবে বেছে নিয়েছে। জেটলির কথায়, ‘‘দু’রকম কথাই সত্য হতে পারে না।’’

জেটলির বক্তব্য, ‘‘রাফাল চুক্তি বাতিল করার প্রশ্নই নেই। সামরিক বাহিনীর এই যুদ্ধবিমান প্রয়োজন। এই বিমান দেশে আনা হবে।’’ সেইসঙ্গে রাহুলকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন জেটলি। তা করতে গিয়ে টেনে এনেছেন সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর আলিঙ্গন করার প্রসঙ্গও। জেটলির মন্তব্য, ‘‘জনসমক্ষে আলোচনাটা ঠিক লাফটার চ্যালেঞ্জ নয়। উনি এক বার কাউকে জড়িয়ে ধরছেন। তার পরে চোখ টিপছেন। তার পরে আবার ১০ বার মিথ্যে বলছেন।’’ অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘‘জনসমক্ষে আলোচনার ক্ষেত্রে কথাবার্তায় বোধ-বুদ্ধির ছাপ থাকা উচিত।’’ জবাবে রাহুলের দাবি, ‘‘যে বিষয়ের পক্ষে সওয়াল করা সম্ভব নয় তা নিয়েও সওয়াল করতে পারেন জেটলি। সে জন্য দু’টি সত্য বা মিথ্যেকে সামনে রেখে বিষয়টি সাজিয়ে তুলতে পারেন তিনি। এ নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত হওয়া উচিত।’’ অন্য দিকে কংগ্রেস মুখপাত্র আনন্দ শর্মার দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী অম্বানীর কাছে রাফাল সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করে শপথের শর্ত ভেঙেছেন। এখন মৌনব্রত নিয়ে বসে রয়েছেন।’’

এর মধ্যে রাফাল নিয়ে ভারতকে বিঁধেছে পাকিস্তান। পাক তথ্যমন্ত্রী ফওয়াদ হুসেন চৌধুরির দাবি, ‘‘রাফাল দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতেই দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক বাতিল করেছে দিল্লি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement