নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি। ছবি: পিটিআই।
পশ্চিমবঙ্গে শাসক দলের একাংশের আশ্রয়ে কোথায় কোথায় জামাতের দুষ্কৃতীরা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে বিশদ তথ্য চাইল নয়াদিল্লি।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হিসাবে তাঁর প্রথম নয়াদিল্লি সফরে এসে আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আবুল হাসান মাহমুদ আলি। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, নিরাপত্তার নানা বিষয়ের পাশাপাশি তৃণমূল-জামাত যোগাযোগের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে উত্থাপন করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের দমনে সর্বাত্মক অভিযান চালাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু গত দু-আড়াই বছরে এই দুষ্কৃতীরা দলে দলে পালিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে। রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের একাংশের আশ্রয়ে তারা ভারতেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। দু’দেশের নিরাপত্তার পক্ষেই বিষয়টি উদ্বেগের। বাংলাদেশের পক্ষে বলা হয়, তৃণমূলের এক রাজ্যসভা সদস্যের সঙ্গে বাংলাদেশের জামাতে ইসলামির যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁর ব্যবস্থাপনায় সীমান্ত পেরিয়ে জামাতের হাতে কোটি কোটি টাকা পৌঁছেছে বলেও খবর।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভাল বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, নিরাপত্তার প্রশ্নে নয়াদিল্লি কোনও আপস করবে না। পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় জামাতের দুষ্কৃতীরা আশ্রয় নিয়ে রয়েছে, কারা তাদের মদতদাতা, সে বিষয়ে তাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, বাংলাদেশ তা ভারতের হাতে দিক। ভারত সরকার অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
ভারতীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আজ দিনভর বৈঠক করলেন মাহমুদ আলি। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। মোদী তাঁকে বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এক সুতোয় গাঁথা। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান, আর মৌলবাদীদের আগ্রাসন থেকে এই দেশকে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ। শেখ হাসিনার তরফে মোদীকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান মাহমুদ আলি। শীঘ্রই বাংলাদেশে যেতে চান বলে জানান মোদী। তিনিও পড়শি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আগামিকাল ভারত-বাংলাদশ যৌথ সমন্বয় কমিটির বৈঠক। সেখানে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মাহমুদ আলি। তার আগে আজ বিশেষ মুখ খুলতে চাননি তিনি। তবে বাংলাদেশের জামাতে ইসলামির সঙ্গে তৃণমূলের একাংশের যোগাযোগ ও সারদার টাকা লেনদেনের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, “এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।” বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চাই। দু’দেশের সম্পর্ক আরও ইতিবাচক হয়ে উঠবে বলে আমি আশাবাদী।”