জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ছবি- সংগৃহীত।
ডোকলামের পর জম্মু-কাশ্মীরের পৃথক সংবিধান নিয়ে মন্তব্যের জেরে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। উপত্যকার বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ডোভালের ওই মন্তব্য নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। সমালোচনায় সরব হয়েছে মেহবুবা মুফতির দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-ও।
ডোভাল বলেছেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের জন্য পৃথক সংবিধান অর্থহীন। বিভ্রান্তিমূলক। কারণ, কোনও ভাবেই দেশের সার্বভৌমত্বকে লঘু করা যায় না। তার অপব্যাখ্যাও করা যায় না।’’
সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে কয়েকটি বিশেষ ক্ষমতা, অধিকার ও সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সেই ধারার অবলোপের পক্ষে। সংবিধানের ওই ধারাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। তাই রাজনৈতিক ও আইনজীবী মহলের একাংশের ধারণা, ডোভালের ওই মন্তব্যের পিছনে কেন্দ্রের মদত থাকলেও থাকতে পারে।
সর্দার বল্লভভাই পটেলের ওপর লেখা একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বুধবার ডোভাল বলেছেন, ‘‘ভারতীয় সংবিধানের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। দেশের সব মানুষের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। যা গোটা দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। কিন্তু দেশেরই একটি রাজ্য জম্মু-কাশ্মীরে তা হয়নি। সেখানে ভারতীয় সংবিধানের অঙ্গচ্ছেদ (ট্রাঙ্কেটেড) হয়েছে। চালু রয়েছে আরও একটি সংবিধান। যা বিভ্রান্তিমূলক।’’
আরও পড়ুন- রেহাই নেই ছোটদেরও, কাশ্মীরে স্কুলবাসে পাথর হামলা
আরও পড়ুন- পৃথক জেলার দাবিতে উত্তপ্ত নওশেরা, আক্রান্ত ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার
পরে ডোভাল আলাদা ভাবে সংবাদ সংস্থাকে জানান, স্বাধীনতার সময় দেশের যে ৫৬০টি অঙ্গরাজ্য ছিল, তাদের আলাদা আলাদা আইন ছিল। সংবিধান তৈরি হওয়ার সময় সেই সবক’টি রাজ্যের আইনকে একসূত্রে গেঁথে ভারতীয় সংবিধান প্রণয়ন হয়েছিল। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে তার ব্যাতিক্রম ঘটেছে।
ডোভালের ওই ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের জেরে শ্রীনগরে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা মুস্তাফা কামাল এ দিন বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে সরকারের কথাটাই ডোভাল বলছেন। বুঝতে হবে, দিল্লি ভারতকে টুকরো করতে চাইছে।’’
কয়েক দিন আগেও উপত্যকায় জোট সরকারে বিজেপি-র শরিক ছিল যে রাজনৈতিক দল, সেই পিডিপি-র নেতা রফি আহমেদ মিরের বক্তব্য, ‘‘অজিত ডোভালের মতো এক জন দায়িত্বশীল মানুষের এই মন্তব্য, আমার মনে হয়, একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীন। এই সব কথাবার্তা কাশ্মীর সম্পর্কে উপত্যকার মানুষের ধ্যানধারণাকে আঘাত করেছে।’’