উঠে গেল রামায়ণ ও গীতা রাখার ফরমান

বিতর্কের মুখে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রন্থাগারে গীতা-রামায়ণ রাখার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিল জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

বিতর্কের মুখে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রন্থাগারে গীতা-রামায়ণ রাখার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিল জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের উপদেষ্টা বি বি ব্যাসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকের পরে রাজ্যের শিক্ষা দফতর গত কাল ওই নির্দেশ জারি করেছিল। বলা হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মীরের সব স্কুল-কলেজে ও সরকারি গ্রন্থাগারে ভাগবৎ গীতা ও রামায়ণের উর্দু ও কাশ্মীরি অনুবাদ রাখতে হবে।

Advertisement

এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। বিজেপি বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দল সরব হয় ওই ফরমানের বিরুদ্ধে। ন্যাশনাল কনফারেন্স সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘শুধু কেন গীতা-রামায়ণ? স্কুল-কলেজে বা সরকারি পাঠাগারে ধর্মপুস্তক রাখা উচিত বা প্রয়োজনীয় কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তবে রাখতেই যদি হয়, তবে বেছে বেছে কেন তা করা হচ্ছে? কেন অন্যান্য ধর্মকে উপেক্ষা করা হচ্ছে?’’

মানবাধিকার কর্মী রাজা মুজাফ্ফর বলেন, ‘‘কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্রদের এখন গীতা-রামায়ণ পড়তে হবে। কিন্তু কোরানের কোনও উল্লেখ নেই। কেন এই ধর্মীয় বিভাজন? উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ পড়ুয়া মুসলিম হলেও স্থানীয় সরকার অতীতে কখনও সংখ্যালঘুদের কোরান পড়া বাধ্যতামূলক করেনি বা চাপিয়ে দেয়নি। আমরা এই কুৎসিত চক্রান্ত রুখবই।’’ সোশ্যাল মিডিয়াতেও দ্রুত ছড়াতে থাকে প্রতিবাদ। এরই মধ্যে আজ এক সরকারি মুখপাত্র জানান, মুখ্যসচিব বিভিআর সুব্রহ্মণ্যম শিক্ষা দফতরের ওই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আগেই বাতিল করে দিয়েছেন।

Advertisement

প্রশ্নের মুখে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতাও। মেহবুবা মুফতির সরকার থেকে বিজেপি সরে দাঁড়ানোর পরে রাজ্যে এখন রাষ্ট্রপতির শাসন। অর্থাৎ রাজ্যপালের মাধ্যমে প্রশাসন চালাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যপাল হিসেবে সত্যপালের নিয়োগের সময়েই তাঁর বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কম চর্চা হয়নি। ফের শুরু হয়েছে তা। বিজেপি-আরএসএস এখন লোকসভা ভোটের মুখে হিন্দুত্ব ও রাম মন্দির নিয়ে হাওয়া তুলে মেরুকরণে নেমেছে। কাশ্মীরে ‘গীতা-রামায়ণ চাপিয়ে দেওয়া’র এই চেষ্টাকে তারই অঙ্গ বলে মনে করছে বিরোধীরা। নির্দেশটি প্রত্যাহার করা হলেও, গোটা ঘটনাটিকে জম্মু-কাশ্মীরে হিন্দুত্বের জল মাপার চেষ্টা বলেও মনে করছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন