বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন দেশের মাটিতে বাস্তবায়িত করা তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। এর পাশাপাশি বাণিজ্য বৃদ্ধি, দু’দেশের অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে থমকে থাকা বিষয়গুলিতে গতি আনতে আজ সন্ধ্যায় জাপান উড়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদীর তিন দিনের জাপান সফর শুরু হচ্ছে কিয়োটো থেকে। মোদীর এই সফরকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে কূটনৈতিক মহল। এশিয়া মহাদেশে আর্থিক ও সামরিক ভাবে চিনের শক্তিবৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন ভারত ও জাপান দু’দেশই। ফলে চিনের আগ্রাসন রুখতে ভারত ও জাপান আগামী দিনে কী ভাবে এক সঙ্গে এগোবে সেই কৌশলগত বিষয়গুলিও দু’দেশের নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও দু’দেশই চায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বাড়াতে।
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, চলতি সফরে অন্যতম যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তা হল ভারত-জাপান রেল সম্পর্ক। বর্তমানে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ভারতীয় রেলে বড় মাপের দু’টি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। প্রথমত, পশ্চিম পণ্য করিডর নির্মাণ। দ্বিতীয়ত, মুম্বই-আমদাবাদের মধ্যে প্রস্তাবিত বুলেট ট্রেনের জন্য সমীক্ষার কাজ।
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান অরুণেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, “মুম্বই-আমদাবাদ লাইনে বুলেট ট্রেন চালানোর প্রশ্নে তিন ধাপে সমীক্ষা করছে জাইকা। প্রথম ধাপের রিপোর্ট জমা পড়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের রিপোর্ট আগামী মাসের মধ্যে জমা পড়বে। আর তৃতীয় রিপোর্ট আগামী বছরের জুন মাসে জমা পড়বে।” প্রাথমিক সমীক্ষা বলছে, মুম্বই-আমদাবাদের মধ্যে বুলেট ট্রেন চালাতে প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচ পড়বে। ফলে স্বভাবতই প্রয়োজন বিদেশি লগ্নি। ইতিমধ্যেই এ দেশে বুলেট ট্রেন চালাতে আগ্রহ দেখিয়েছে বেশ কিছু জাপানি সংস্থা। এই বিষয়ে জাপানি লগ্নি টানা মোদীর কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
অসামরিক ক্ষেত্রে পরমাণু শক্তির ব্যবহারের প্রশ্নে গত কয়েক বছর ধরেই দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চালু রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক আশা করছে, চলতি সফরে এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে দু’দেশই। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে দু’দেশের।
কিয়োটো শহর দিয়ে জাপান যাত্রা শুরু করছেন মোদী। তাঁর ওই সিদ্ধান্তের পিছনেও তাৎপর্য রয়েছে বলে জানিয়েছে সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আকবরউদ্দিন জানান, “আধুনিকতা ও ঐতিহ্য-দু’টি বিষয়কে এক সঙ্গে কী ভাবে ধরে রাখা সম্ভব তা দেখিয়েছে কিয়োটো।”
বিজেপি সূত্রের খবর, কিয়োটোর এই আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের এই মেলবন্ধন নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতেও ঘটাতে চান মোদী। তাই কিয়োটোর মেয়রের সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।