সরকারি অনুষ্ঠানে তেজস্বীর অনুপস্থিতি নতুন করে জল্পনা তৈরি করল।— ফাইল চিত্র।
দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস তারা করবে না জানিয়ে তেজস্বীকে চার দিন সময় দিল জেডিইউ।
আজ নীতীশ কুমারের পৌরোহিত্যে দলীয় নেতাদের বৈঠকের পর তেজস্বী বা আরজেডির নাম না করেই জেডিইউ নেতারা সাংবাদিকদের জানান, দুর্নীতির সঙ্গে জেডিইউ আপস করবে না। এটা দলের ভাবমূর্তির প্রশ্ন। সুতরাং যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁকে চার দিনের সময় দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে তিনি যেন নিজেই এগিয়ে আসেন এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেন।
উল্লেখ্য, চার দিন পর, আগামী রবিবার জেডিইউ পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছেন নীতীশ। জেডিইউয়ের এই ঘোষণার পর ফের বৈঠকে বসেছেন আরজেডি নেতৃত্ব। আজ পশুখাদ্য মামলায় ফের হাজিরা দিতে রাঁচীতে ছিলেন দলনেতা লালু প্রসাদ। তবে রাতে তিনি পটনায় ফিরে দলের নেতাদের বৈঠকে যোগ দেন। পরে আরজেডি জানায়, আজ, বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী’ হাজির থাকবেন।
সোমবারই আরজেডি জানিয়ে দেয়, তেজস্বীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত নয়। সুতরাং তাঁকে বিহার মন্ত্রিসভা থেকে প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্নই নেই। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব জানায়, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আরজেডির সংস্রব ত্যাগ করলে তাঁর সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন দিতে তাঁরা তৈরি। বিহার রাজনীতির এই সার্বিক প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখেই আজ ১ নম্বর অ্যানে মার্গের মুখ্যমন্ত্রী নিবাসে বৈঠকে বসেন নীতীশ কুমার। প্রথমে দলের কোর কমিটির বৈঠক হয়। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত নেতারা, শাখা সংগঠনের প্রধানরা এবং পরিষদীয় দলের পদাধিকারীরা বৈঠকে সামিল হন। জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে নীতীশ সার্বিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে আপস তাঁরা করবেন না। এই ‘আপস না করা’-র ভাবমূর্তিটাই সাধারণের কাছে তাঁর বিশেষত্ব। সেই জায়গায় কোনও রকম পিছু হঠার জায়গা নেই।
নীতীশ জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে লালুপ্রসাদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু আরজেডি নেতৃত্ব তেজস্বীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাতে প্রস্তুত নয়। জে়ডিইউ নেতারা নীতীশকে জানিয়ে দেন, এ ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এরপরেই ঠিক হয়, আরজেডিকে চার দিনের সময় দিয়ে চাপ বাড়ানো হবে। তার মধ্যে তেজস্বী সরে না দাঁড়ালে রবিবারের পরিষদীয় দলের বৈঠকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈঠকের পর ঠিক হয় সংবাদ মাধ্যমকে এক-দু’লাইনের বেশি কিছু বলা হবে না। প্রথমে ঠিক হয়, প্রদেশ জেডিইউ সভাপতি বশিষ্ঠ নারায়ণ সিংহ সাংবাদিক বৈঠক করবেন। কিন্তু ‘ভদ্রলোক’ বশিষ্ঠবাবু সংবাদ মাধ্যমের চাপ সামাল দিতে পারবেন না মনে করে সাংবাদিক বৈঠকে পাঠানো হয় দলের তিন মুখপাত্র—নীরজ কুমার, অজয় অলোক ও রাজীবরঞ্জন প্রসাদকে।
জেডিইউয়ের আজকের বৈঠকে বিজেপি-র সমর্থন প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়। তবে এখনই মোদী-অমিত শাহের ‘খপ্পরে’ পড়তে নীতীশ কুমার রাজি নন বলেই জেডিইউ সূত্রের বক্তব্য। বরং আজকের বৈঠকে জেডিইউয়ের কয়েকজন নেতা আরজেডি-র উপরে প্রবল চাপ তৈরি করে তাদের আরও দুর্বল করার পক্ষে মত ব্যক্ত করেন। তাঁরা মনে করেন, চার দিকে থেকে চাপের মুখে যাদব পরিবার। এই সময়ে একেবারে সমর্থন তুলে নিয়ে জোট-সরকার ছাড়ার মতো জায়গায় লালুপ্রসাদ নেই।