JEE Scam

জয়েন্ট এন্ট্রান্স চক্রের জাল বহু দূর!

পুলিশ সন্ধান চালাচ্ছিল, কী ভাবে বায়োমেট্রিক পার করে নীলের বদলে অন্য পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিল! তখনই জানা যায় বিরাট চক্রের কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

মূল পরীক্ষার্থী গুয়াহাটির পরীক্ষাকেন্দ্রে বসেছে। নির্দিষ্ট কম্পিউটারে পরীক্ষা শুরুর জন্য লগ-ইন করতেই সেই স্ক্রিন কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে অবিকল ফুটে উঠল বিহারের প্রত্যন্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে। যেখানে কম্পিউটারের সামনে বসে দুঁদে ‘ভুতুড়ে’ পরীক্ষার্থী।

Advertisement

এর পর একের পর এক প্রশ্ন আসতে থাকল গুয়াহাটির কম্পিউটারে। উত্তর লেখা হতে থাকল বিহারের কম্পিউটারে! তার জেরেই গুয়াহাটির পরীক্ষার্থীর ঝুলিতে ৯৯.৮ শতাংশ নম্বর। রাজ্যের ভিতরে প্রথম!

একটা কল রেকর্ডিং। আর তার সূত্র ধরেই শুধু অসম নয়, বিহার, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে বিস্তৃত এক বিরাট জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষা কেলেঙ্কারির মৌচাকে ঢিল পড়েছে। অসমে জয়েন্ট এন্ট্রান্স কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে পুলিশ দেখছে এ এক বিরাট হিমশৈলের চূড়ামাত্র। গোটা চক্র ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। এ ভাবেই বছরের পর বছর মোটা টাকার বিনিময়ে ধনীর সন্তানরা জয়েন্টে আসন ছিনিয়ে নিয়েছে।

Advertisement

গুয়াহাটির চিকিৎসক দম্পতির ছেলে নীল নক্ষত্র দাস ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়নি, কলা বিভাগে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা-মার চাপে জয়েন্ট দিতে হয়। ছেলেকে পাশ করাতে বিশ লাখ টাকা খরচ করে জয়েন্ট পাশের দালাল সংস্থা গ্লোবাল এডু লাইটের সাহায্য নেন জ্যোতির্ময় দাস। ছেলে রাজ্যে প্রথমও হয়। কিন্তু বন্ধুর সঙ্গে তার ফোনে কথোপকথন ভাইরাল হওয়ায় মামলা ও তার জেরে আবার বাবা-ছেলে এবং দুর্নীতিতে জড়িত গ্লোবাল এডু লাইটের মহিলা কাউন্সেলর ও প্রযুক্তিগত কারচুপিতে সাহায্য করা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসের ৩ কর্মী হাজতে।

পুলিশ সন্ধান চালাচ্ছিল, কী ভাবে বায়োমেট্রিক পার করে নীলের বদলে অন্য পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিল! তখনই জানা যায় বিরাট চক্রের কথা। পুলিশ বলছে, গ্লোবালের মতো দালাল সংস্থাগুলি প্রথমে পরীক্ষার্থীর থেকে টাকা নেয়। তা চলে যায় বিহারে। সেখানে সেরা মেধাবী পরীক্ষার্থী বা জয়েন্ট উত্তীর্ণদের ভাড়া করে আনা হয়। যাতায়াত, রাজার হালে রাখার খরচ দেয় দালাল চক্র। তার পর নির্দিষ্ট দিনে বিহারে চক্রের হাতে থাকা পরীক্ষাকেন্দ্রে কম্পিউটারের সামনে বসে ভাড়াটে পরীক্ষার্থী।

আবার আসল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষাকেন্দ্রের সঙ্গেও করতে হয় ‘ব্যবস্থা’। এর পর আসল পরীক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষার জন্য কম্পিউটারে লগ-ইন করলে ‘এনি ডেস্ক’ ধাঁচের প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেই স্ক্রিন ম্যাপিং ও ক্লোনিং হয়ে বিহারের কম্পিউটারে সংযুক্ত হয়। আজ সন্ধ্যায় গুয়াহাটি ছেড়ে পালানোর সময়ে গ্রেফতার হয়েছে গ্লোবাল এডু লাইট সংস্থার মালিক ভার্গব ডেকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন