ইয়াসিন মালিকের জেকেএলএফ নিষিদ্ধ

আদর্শ আচরণবিধি চালু থাকা সত্ত্বেও আজ যে ভাবে মোদী সরকার মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক ডেকে জেকেএলএফ-কে নিষিদ্ধ করল, তা তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

ইয়াসিন মালিক।

নির্বাচনী মরসুমে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ)-তে ইয়াসিন মালিকের নেতৃত্বাধীন সংগঠন জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট বা ‘জেকেএলএফ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা এবং তাঁদের উপত্যকা থেকে তাড়ানোয় ওই সংগঠনের অন্যতম প্রধান ভূমিকা ছিল বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা জানান, সংগঠনটি এখনও জঙ্গিদের অর্থ ও সদস্য সংগ্রহে সাহায্য করে যাচ্ছিল। নব্বইয়ের দশকের একাধিক হত্যা ও অপহরণের অভিযোগের নতুন করে তদন্ত শুরু হওয়ায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে জেলে রয়েছেন ইয়াসিন।

Advertisement

আদর্শ আচরণবিধি চালু থাকা সত্ত্বেও আজ যে ভাবে মোদী সরকার মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক ডেকে জেকেএলএফ-কে নিষিদ্ধ করল, তা তাৎপর্যপূর্ণ। বৈঠকে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন সামরিক বাহিনীর প্রধানেরা। পাঁচ বছর আগে মোদী দাবি করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে নিজেদের বাস্তুভিটেয় ফিরতে পারবেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। ভোটবাক্সে পণ্ডিতেরা নিরাশ করেননি মোদীকে। কিন্তু ভোটের মুখে বিরোধীরা মনে করাচ্ছেন, প্রতিশ্রুতি রক্ষায় মোদী ব্যর্থ। রুষ্ট পণ্ডিতরাও। এই পরিস্থিতিতে পণ্ডিত ভোটব্যাঙ্ক অক্ষুণ্ণ রাখতেই আজকের পদক্ষেপ বলে বিশেষজ্ঞদের মত।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, আশির দশকের শেষে জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসের বাড়াবাড়ির পিছনে ইয়াসিন মালিকের প্রধান ভূমিকা ছিল। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একাধিক হত্যাকাণ্ডের মূল মস্তিষ্ক তিনি। এ ছাড়া বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদের তৃতীয় কন্যা রুবাইয়াকে অপহরণ-সহ চার বায়ুসেনা কর্মীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। যদিও রুবাইয়ার দিদি, পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির মতে, এই নিষেধাজ্ঞা অনর্থক। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের স্বার্থে বহু আগেই অস্ত্র ছেড়েছেন ইয়াসিন মালিক। বাজপেয়ীজি তাঁকে কাশ্মীর আলোচনার অন্যতম অংশীদার করেছিলেন। এই ধরনের ক্ষতিকর পদক্ষেপ কাশ্মীরকে মুক্ত কারাগার করে তুলবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

স্বরাষ্ট্রসচিব গৌবা আজ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই ওই সংগঠনটি শুধু জঙ্গিদের নয়, তরুণদের পাথর ছোড়ার জন্য অর্থের জোগান দিত। সব মিলিয়ে ৩৭টি অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।’’ কিন্তু পাঁচ বছর পেরিয়ে ভোটের মুখে কেন ওই সিদ্ধান্ত, তার জবাব দেননি কোনও স্বরাষ্ট্রকর্তাই।

গত কয়েক মাস ধরেই জঙ্গিদের অর্থের জোগান রুখতে সক্রিয় কেন্দ্র। আজ হুরিয়ত কনফারেন্সের নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ইডি। তল্লাশিতে বাড়ি থেকে ১০ হাজার ডলার উদ্ধার হওয়ায় ‘ফেমা’ আইনে জরিমানা করা হয়েছে তাঁকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন