জুবিন গর্গ।- ফাইলচিত্র।
ছবি গড়ে নজির ভাঙার সময় বেফাঁস মন্তব্য ও অশালীন ব্যবহারে ফের বিতর্কের মুখে জুবিন গর্গ। জুবিন সেনাকর্তার টুপি পরায় দিল্লি বিমানবন্দরে সেনাবাহিনীর এক মেজর আপত্তি জানান। কিন্তু মেজরের আপত্তি মানা দূরে থাক, উল্টে তাঁকেই সেলাম ঠুকতে বলেন অসমের সঙ্গীতশিল্পী গর্গ। পরে গুয়াহাটি এসে সাংবাদিকদের বলেন, ওই মেজরকে পেটানোর ইচ্ছে ছিল তাঁর। অসমের 'হার্টথ্রব' জুবিনের ওই ব্যবহার ও মন্তব্যে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ সেনাবাহিনী।
ছবির প্রচারে দিল্লি গিয়েছিলেন জুবিন। সাফল্যের পরেও দিল্লি যান। কিন্তু গত কাল সেখান থেকে ফেরার পথেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। স্পাইসজেটের বিমানে গুয়াহাটি আসছিলেন সপার্ষদ জুবিন। ‘মিশন চায়না’ ছবিতে তিনি 'কর্নেল গোস্বামী'র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তাই ছবির প্রচারের সময় থেকেই সেনা পোষাক ও টুপি তাঁর সঙ্গী। দিল্লি বিমানবন্দরে ১ নম্বর টার্মিনালে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকার সময় অরুণাচলে কর্মরত সেনাবাহিনীর এক মেজর জুবিনের কাছে জানতে চান তিনি কি সেনাবাহিনীতে কর্মরত? জুবিন নিজের পরিচয় দিলে ওই মেজর বলেন, কোনও অসামরিক ব্যক্তি এ ভাবে সেনাবাহিনীর পোষাক পরে ঘুরতে পারেন না। ইন্টারনেট সার্ফ করে দেখান ভারতীয় দণ্ডবিধিতেও তা বেআইনি। এর পরেই জুবিন ও তাঁর অনুগামীদের রোষের মুখে পড়েন ওই মেজর।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রী হতে তৈরি তিনি: বিদেশে মুখ খুললেন রাহুল
আরও পড়ুন- বিয়ে করতে অস্বীকার প্রেমিকের, ডাক্তারি ছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’!
জুবিন নিজে গুয়াহাটি ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, "আমার সঙ্গে এক মেজরের ঝগড়া হয়েছে। ও আমায় বলে, তুই এই টুপি পরতে পারিস না। আমি ওকে বলি, কেউ পারুক না পারুক, আমি জুবিন তা পারি। বরং তোমারই উচিত আমায় স্যালুট করা। কারণ তুমি মেজর। আমি কর্নেল।" সেখানেও না থেমে জুবিন বলেন, "ভাবছিলাম গুয়াহাটিতে নামিয়ে ওকে পেটাব।" জুবিনের ফ্যানরা ওই মন্তব্য সমর্থন করেন।
বিমান জুবিনের সঙ্গে থাকা এক অনুরাগী জানান, জুবিন অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন। অনুরাগীদের এক জন ওই মেজরের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে এসেছেন। ওই মেজর বলেছেন, জুবিনের জায়গায় অমিতাভ বচ্চন থাকলেও তিনি একই ভাবে আপত্তি জানাতেন।
ওই ঘটনা ও জুবিনের এই ধরণের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ সেনাকর্তারা। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সুনীত নিউটন জানান, তাঁরা জুবিনের ওই বক্তব্যের ফুটেজ সংগ্রহ করছেন। তার পর পদক্ষেপ করা হবে। ৩ কোরের মুখপাত্র কর্নেল চিরঞ্জীব কোঁয়রের মতে, "এই হল আমাদের দেশ। যেখানে খোলাখুলি সেনাবাহিনীকে নিয়ে ব্যঙ্গ অপমান করা হয়।"
বিএসএফ-এর এক জওয়ান বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জুবিনের গান শোনান। তিনিও এই ব্যবহারে দুঃখিত। তাঁর কথায়, "জুবিনদাকে আমরা সবাই শিল্পী হিসেবে সম্মান করি। রাজ্যের নবীন প্রজন্ম তাঁকে গুরু বলে মানে। এমন এক জন মানুষ সেনাবাহিনী বা সেনা কর্তাদের নিয়ে এই ধরণের মন্তব্য করলে তাঁর ভক্তরা কী শিখবে?" ৪ কোরের এক কর্নেলের প্রশ্ন, "নিজে ছবিতে সেনাকর্তার ভূমিকায় অভিনয় করেও এক জন শিল্পী কী ভাবে এক জন সেনা অফিসারের সম্পর্কে এমন মন্তব্য করতে পারেন?"
আগেও বিমানবন্দরে সিআইএসএফ জওয়ানদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করায় জুবিনকে আদালতে হাজির হতে হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে ক্ষমা চেয়ে পার পান তিনি।
ও দিকে, 'মিশন চায়না' প্রথম থেকেই রেকর্ড ভেঙে চলেছে। ২ কোটি টাকা দিয়ে মিশন চায়না ছবিটি তৈরি করেছেন জুবিন। এত বড় বাজেটের ছবি এর আগে অসমে তৈরি হয়নি। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে একই সঙ্গে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। যা অসমিয়া সিনেমায় প্রথম। সেই সঙ্গে প্রথম তিন দিনে ছবিটি ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে। সেটিও অসমিয়া ছবির ক্ষেত্রে সর্বকালের নজির। এর আগে ২০১১ সালে 'রামধেনু' ছবিটি ১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। প্রথম দিনে ৪০ লক্ষ টাকার ব্যবসা করে ছবিটি। সেটিও অসমে নজির।