পরিচিতের কাছে যাচ্ছি, মাকে ফোনে বলেন হেমা

খুন হওয়ার কিছু ক্ষণ আগেই মাকে ফোন করেছিলেন চিত্রশিল্পী হেমা উপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’’ শনিবার পুলিশের কাছে এ কথা জানিয়েছেন হেমার মা, বীণা মানুভাই হিরানি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:১২
Share:

খুন হওয়ার কিছু ক্ষণ আগেই মাকে ফোন করেছিলেন চিত্রশিল্পী হেমা উপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’’ শনিবার পুলিশের কাছে এ কথা জানিয়েছেন হেমার মা, বীণা মানুভাই হিরানি।

Advertisement

তবে ওই পরিচিত ব্যক্তিটি কে, তা নিয়ে কিছুই বলতে পারেননি ৭২ বছরের বৃদ্ধা।

‘‘গত ১১ ডিসেম্বর, যে দিন হেমা খুন হয়েছিল, সন্ধে ৬টা ২৩ মিনিটে ফোন করে বলেছিল, পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে। জানিয়েছিল, পরের দিন দুপুর ১টা নাগাদ আবার ফোন করবে,’’ বলেন বীণা। কিন্তু সেই ফোন আর আসেনি। তার পর থেকে হেমার কোনও খোঁজই আর পাওয়া যাচ্ছিল না। বাড়ির লোকজন এক সময় খোঁজ শুরু করেন। তার পরের খবর এখন সকলেরই জানা।

Advertisement

কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ও খুন হয়েছে, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। হেমা খুব ভাল মেয়ে ছিল। প্রতি দিন ফোন করে খোঁজ নিত। ভাবতে পারছি না, ও আর বেঁচে নেই। সব শেষ হয়ে গেল।’’

হেমা-খুনে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর প্রাক্তন স্বামী চিন্তন উপাধ্যায়কে। আর এক অভিযুক্ত, হেমার সহকর্মী বিদ্যাধর রাজভর ওরফে গোতু এখনও ফেরার। বীণা আজ বলেন, ‘‘চিন্তন বা গোতু, যে-ই আমার মেয়েকে খুন করে থাকুক, শাস্তি পেতেই হবে।’’ পুলিশকে তিনি এ-ও বলেন, হেমা আর চিন্তনের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। তবে পরিণতি যে এই হবে, ভাবতে পারেননি কখনওই।

কলেজে প্রেম। তার পর ’৯৮-এ বিয়ে। প্রথমে বোরীভলীর একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে দু’জনে সংসার পাতেন। বড় শিল্পী হওয়ার দৌড়ে দু’জনকেই খুব লড়াই করতে হয়েছে। এ সময় কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক একেবারেই স্বাভাবিক ছিল। সমস্যাটা শুরু হয় জুহুর ফ্ল্যাটে চলে যাওয়ার পর।

বীণা বলেন, ‘‘২০০৬-এ হেমা প্রথম চিন্তনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় আমার কাছে। ভেবেছিলাম ছোটখাটো ঝামেলা।’’ তাই ওকে সাবধান করেছিলাম অসুস্থ বাবার কানে যেন এ সব না তোলে। ওই বছরই হেমার বাবা মারা যান। মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে সমস্যাও ক্রমে বাড়তেই থাকে। এমনকী বিবাহবিচ্ছেদের পরও দু’জনের ঝামেলা মেটেনি। শেষমেশ পরিস্থিতি এমন হয়েছিল, হেমার পোষা কুকুর দু’টো নিয়েও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চিন্তন।

জোড়া খুনের কারণ জানতে চিন্তনকে এখনও জেরা করছে পুলিশ। গোতুর বোন গীতার দাবি, টাকার জন্য তাঁর ভাই খুন করবেন, বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। পুলিশ অবশ্য জোর দিয়ে বলতে পারছে না কিছুই। তাদের ধারণা, খুনের ঘটনায় চিন্তনই মূল চক্রী। হয়তো তাঁকে সাহায্য করেছে বাকিরা। পুলিশের বক্তব্য, গোতুকে ধরা গেলেই ছেঁড়া ছেঁড়া সূত্রগুলোকে হয়তো এক সুতোয় বাঁধা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন