বিচারপতি নিয়োগ বিল পাশ লোকসভায়

বিতর্কিত ধারা সরিয়ে রেখেই বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিল আজ লোকসভায় পাশ করিয়ে নিল সরকার। বিলের প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছিল, জাতীয় বিচারবিভাগীয় কমিশন বিচারপতি হিসেবে কারও নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করার পরে তিনি তা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ওই নাম ফের সুপারিশ করতে গেলে কমিশনের সমস্ত সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২০
Share:

বিতর্কিত ধারা সরিয়ে রেখেই বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিল আজ লোকসভায় পাশ করিয়ে নিল সরকার।

Advertisement

বিলের প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছিল, জাতীয় বিচারবিভাগীয় কমিশন বিচারপতি হিসেবে কারও নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করার পরে তিনি তা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ওই নাম ফের সুপারিশ করতে গেলে কমিশনের সমস্ত সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হবে। এই ব্যবস্থায় আপত্তি তুলে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এর ফলে বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনের ক্ষমতায় ভারসাম্যের অভাব হতে পারে। সেই যুক্তি মেনে আজ ‘সর্বসম্মতি’ শব্দটি বিল থেকে মুছে ফেলে সরকার। তার পর সর্বসম্মতিতেই সেই বিল পাশ হয়েছে লোকসভায়। একই সঙ্গে পাশ হয়েছে কমিশনকে সাংবিধানিক সংস্থার মর্যাদা দেওয়ার জন্য ৯৯ তম সংবিধান সংশোধনী বিল।

আগামিকাল বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে রাজ্যসভায় বিল দু’টি পাশ করানোর ব্যাপারে সক্রিয় হতে বিজেপির রাজনৈতিক ম্যানেজারদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যসভায় সরকার পক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। বিলটি আরও ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠিও দিয়েছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ। কিন্তু কংগ্রেসের মূল আপত্তি মেনে নিয়েই যখন বিলটিতে সংশোধন করা হয়েছে, তখন রাজ্যসভায় সেটি পাশ করাতে সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদি কাল রাজ্যসভায় বিল পাশ হয়ে যায়, তা হলে মোদী জমানার প্রথম সংসদ অধিবেশনেই একটি মাইলফলক প্রতিষ্ঠা হবে। আজ লোকসভায় বিল পাশের পর কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংস্কার দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া ছিল। সংবিধান সংশোধন বিলটি দেশের বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে সুদুরপ্রভাবী হয়ে উঠবে।”

Advertisement

নয়া বিল অনুসারে জাতীয় বিচারবিভাগীয় কমিশনের প্রধান হবেন ভারতের প্রধান বিচারপতি। এ ছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের দু’জন বরিষ্ঠ বিচারপতি, দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং কেন্দ্রী আইনমন্ত্রী থাকবেন এই কমিশনে। এই কমিশন নাম বাছাই করে বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। তিনি কোনও নাম পুনর্বিবেচনার জন্য কমিশনের কাছে ফেরত পাঠাতে পারেন। আবার কমিশনের দু’জন সদস্য সহমত হয়ে কোনও নামে ভেটো দিতে পারবেন।

রাষ্ট্রপতি কোনও নাম ফেরত পাঠালে তা ফের সুপারিশের ক্ষেত্রে কমিশনে সর্বসম্মতির ধারা খারিজে কেন রাজি হল সরকার? রাজ্যসভায় বিল পাশ করানোর এটা একটা কৌশল সন্দেহ নেই। তা ছাড়া, কংগ্রেসের দাবি যে অমূলক নয়, সেটাও বুঝতে পারছিলেন সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে এই প্রশ্নে বিলটির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন তাঁরা।

লোকসভায় সমর্থন দেওয়ার পরেও রাজ্যসভার কংগ্রেস নেতৃত্ব বিচারপতি নিয়োগ বিল নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছে তাকে আদতে বিমা বিল নিয়ে চাপের রাজনীতি হিসেবেই দেখছে সরকার। বিমা বিলকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে চায় কংগ্রেস। সরকারি সূত্র বলছে, বিচারপতি নিয়োগ বিল পাশ করানোর তাগিদে কাল বিমা বিল নিয়ে সিলেক্ট কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন