ছররার বিকল্প কি গন্ধবোমা!

বিক্ষোভকারীদের রুখতে ছররা বন্দুক ব্যবহার করা নিয়ে সারা দেশে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে। গুলি লেগে চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু মানুষের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কনৌজ শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

কাশ্মীরে পাথর ছোড়া রুখতে এ বার ছররার বিকল্প তৈরি বিজ্ঞানীদের।

পাথরের পাল্টা গন্ধবোমা।

Advertisement

কাশ্মীরে বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোড়া রুখতে এ বার ছররার বিকল্প হিসেবে বিশেষ এক ধরনের গন্ধবোমা তৈরি করছেন উত্তরপ্রদেশের বিজ্ঞানীরা। যে বোমা ছররা গুলির মতো ক্ষতি করবে না শরীরের। শুধু ছোড়া মাত্র চারদিক ভরে যাবে বিকট দুর্গন্ধে। সুগন্ধী তৈরির জন্য বিখ্যাত কনৌজেই তৈরি হচ্ছে এই গন্ধবোমা।

বিক্ষোভকারীদের রুখতে ছররা বন্দুক ব্যবহার করা নিয়ে সারা দেশে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে। গুলি লেগে চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু মানুষের। ছোট ছোট ছররা খুব তীব্র গতিতে শরীরে বিঁধে যাওয়ার তা বার করা সহজ নয়। মৃত্যুও হয় অনেক সময়ে।

Advertisement

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের অধীন কনৌজের ফ্রেগ্রেন্স অ্যান্ড ফ্লেভার ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (এফএফডিসি) বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তাঁদের তৈরি গন্ধবোমা শারীরিক ক্ষতি করবে না। বোমাটির আকার হবে ক্যাপসুলের মতো। যা ছুড়ে মারলেই ফেটে ছড়িয়ে পড়বে ধোঁয়া আর তার সঙ্গে বিকট দুর্গন্ধ।

এফএফডিসির ডিরেক্টর শক্তি বিনয় শুক্ল বলেছেন, ‘‘বিকট দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ভরা থাকবে ছোট কাচের ক্যাপসুলের ভিতরে। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় যে বন্দুকের সাহায্যে, তা দিয়েই ছোড়া হবে এই ক্যাপসুল-বোমা। নয়া অস্ত্রের কলাকৌশল সবিস্তার ব্যাখ্যা করে চিঠি লেখার পরে ওই গন্ধবোমার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষ গবেষণা শাখা। গ্বালিয়রের একটি পরীক্ষাগারে শীঘ্রই পরীক্ষা করা হবে এই গন্ধবোমা।

প্রাণঘাতী অস্ত্রের বিকল্প হিসেবে সেনা ও পুলিশ ছররা ব্যবহার করলেও চিকিৎসকেরা বলছেন, এই গুলি সারা জীবনের মতো পঙ্গু করে দিতে পারে মানুষকে। কাশ্মীরের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক নিসার উল হাসান বলেছেন, ‘‘এখনও এখানে ছররায় আহত ১২০ জনের চিকিৎসা চলছে। ৭০ থেকে ৮০ জনের চোখে অস্ত্রোপচার, হয়েছে কিন্তু তাঁরা কবে দেখতে পাবেন বা আদৌ পাবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’’

সমালোচনার মুখে পড়ে ছররার বিকল্প কী হতে পারে তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটিও গঠন করে কেন্দ্র। বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার জন্য ভাবা হয়েছে ‘পাভা শেল’-এর কথাও। লঙ্কার গুঁড়ো ভরা এই গ্রেনেড ফাটলে সাময়িক ভাবে চোখ জ্বালায় ভুগবেন বিক্ষোভকারীরা। তবে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। ২০০৮ সাল থেকে উন্মত্ত জনতাকে সামলাতে জলকামানের মাধ্যমে এক ধরনের গ্যাস ব্যবহার করা শুরু করে ইজরায়েল। যা প্রয়োগ করা হলে পচা বর্জ্যের মতো দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেলে কনৌজের এই গন্ধবোমা তুলে দেওয়া হবে সেনার হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন