রাজ্যের মধ্যেই রাজ্যের দাবি নিয়ে দিল্লি যাত্রা

১৯৬৯ সালে সংবিধানের ২২তম সংশোধনীতে অসমে রাজ্যের মধ্যেই স্বশাসিত রাজ্য গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সংবিধানের ২৪৪ অনুচ্ছেদে আগেই রাজ্যের অধীনে স্বশাসিত পরিষদের ব্যবস্থা ছিল। তার সঙ্গে ২৪৪এ নামে নতুন অনুচ্ছেদ যোগ হয়। কেন এই ব্যবস্থা?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ০৩:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

একেবারে আলাদা রাজ্য নয়, সংবিধানের ২৪৪এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যের মধ্যেই ‘স্বশাসিত রাজ্য’-এর দাবি তুলল কার্বি আংলংয়ের বিজেপি শাসিত পরিষদ। পরিষদের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে ২৬টির মধ্যে ২৪টি আসন জিতেছে বিজেপি। বিজেপি সদস্যরাই জানান, এই মাসের মধ্যেই মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হবেন। তার পরেই রাজ্যের মধ্যে ‘স্বশাসিত রাজ্যের’ দাবি নিয়ে দিল্লি যাবেন তাঁরা।

Advertisement

১৯৬৯ সালে সংবিধানের ২২তম সংশোধনীতে অসমে রাজ্যের মধ্যেই স্বশাসিত রাজ্য গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সংবিধানের ২৪৪ অনুচ্ছেদে আগেই রাজ্যের অধীনে স্বশাসিত পরিষদের ব্যবস্থা ছিল। তার সঙ্গে ২৪৪এ নামে নতুন অনুচ্ছেদ যোগ হয়। কেন এই ব্যবস্থা? সে সময় অসম ভেঙে মেঘালয় রাজ্য তৈরি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছিল। রাজ্য ভাগের সময় কার্বি আংলং ও ডিমা-হাসাওকে অসমের মধ্যে ধরে রাখতে তাদের স্বশাসিত রাজ্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অসমের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বিমলাপ্রসাদ চালিহা কেন্দ্রে ইন্দিরা গাঁধী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াই বি চহ্বাণকে রাজি করান। চহ্বাণ সংসদে এই সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করে বলেছিলেন, শুধুমাত্র অসমের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় এই রকম রাজ্যের মধ্যে রাজ্য গড়ার পথ তৈরি করার লক্ষ্যেই এই সংশোধনী সরকার এনেছে। এই স্বশাসিত রাজ্যের নিজস্ব বিধানসভা, মন্ত্রী পরিষদ থাকবে। তবে তার জন্য সংসদে পৃথক বিল আসবে। আর কী কী ক্ষমতা ওই স্বশাসিত রাজ্যকে দেওয়া হবে, তা সেই বিলেই বলা হবে। অভিভাবকত্ব অবশ্য অসমের রাজ্যপালই করবেন।

সংবিধান সংশোধন হলেও কখনও তা রূপায়ণ করা হয়নি। স্বশাসিত পরিষদেই থমকে গিয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তরের এই প্রক্রিয়া। বিজেপি বিধায়ক মান সিংহ রংপি বলেন, ‘‘২০০৯-এ লালকৃষ্ণ আডবাণী, ২০১৪-এ রাজনাথ সিংহ প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। তা পূরণ হয়নি।’’ কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর রাজনাথ সিংহ ২৪৪এ ধারায় কার্বি আংলং-এ স্বশাসিত রাজ্য গঠনের আশ্বাস দেন। কার্যত এই স্লোগানকে সামনে রেখেই কার্বি স্বশাসিত পরিষদের ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি।

Advertisement

১৯৮৬ সাল থেকে কার্বিরা উত্তর কাছাড়ের পাহাড় বা ডিমা হাসাও জেলা ও কার্বি আংলং মিলিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে। কিন্তু আগের সরকার কার্বি আংলংকে দু’ভাগ করে দিয়েছে। নব নির্বাচিত সদস্যরা জানান, কার্বিরা বিজেপির উপরে যে আস্থা রেখেছেন, তাকে সম্মান দেওয়া তাঁদের কর্তব্য। তাই কার্বি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্দেশে রাজ্যের মধ্যে থেকেই স্বশাসিত কার্বি রাজ্য গঠনের দাবি নিয়ে জুলাইয়েই তাঁরা দিল্লি যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন