সঙ্ঘের উদ্যোগে ভারতমাতার পুজো। করিমগঞ্জে। —নিজস্ব চিত্র।
আগে কখনও ওই দেবীর পুজো দেখেননি সীমান্ত-শহরের বাসিন্দারা। সে পুজোর মন্ত্র কী? পাঁচালিই বা কেমন— তা জানেন না কেউই।
করিমগঞ্জের স্টেশন রোডে তা-ই ভারতমাতার পুজো দেখতে মণ্ডপে উপচে পড়ল ভিড়!
ফুটদশেক দীর্ঘ দেবীমুর্তি। তার পিছনে অবিভক্ত ভারতবর্ষের ছবি— একই মানচিত্রে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল ভূটান, বাংলাদেশ, ব্রহ্মদেশ। পুজোর উদ্যোক্তা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। সহায়তায় অবশ্যই পরিবারের অন্যরা। যেমন—বিজেপি, বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ প্রভৃতি।
পুরোহিত রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের অন্যতম সদস্য নর্মদা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘দেবী দুর্গা, কালী, জগদ্ধাত্রীকে কেউ দেখেননি। ভক্তি এবং বিশ্বাসেই দেব-দেবীর পুজার্চনা করা হয়। মানুষ তার কল্পনায় তাঁদের অবয়ব তৈরি করে। একটি মতে, শকুন্তলার পুত্র ভরতের নাম থেকে ভারতবর্ষের নামকরণ হয়েছে। পাশাপাশি, মহর্ষি বেদব্যাস ও পুরাণেও ভারতের নামের ব্যাখা রয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পুরাণ মতে ভারতমাতাকে সিংহবাহিনী, মাতৃরূপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।’’ নর্মদাবাবু জানান, ভারতমাতার পুজোর মন্ত্র তাই মূলত দেবী দুর্গার আরাধনা মন্ত্রই। তবে পুজোর সংকল্প পৃথক। এ ক্ষেত্রে ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলি ও দেশবাসীর কল্যাণে সংকল্প করা হয়।
ভারতমাতার পুজোর আয়োজনের কারণ কী? উদ্যোক্তাদের যুক্তি, এ দেশে অনেক নাগরিক দেশের কথা ভাবেন না। তাঁদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ গড়ে তুলতেই এই প্রচেষ্টা। পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য কিশোর দে বলেন, ‘‘ভারতমাতার আরাধনা করে সবার মধ্যে দেশপ্রীতি বাড়াতে চাই। প্রান্তিক জেলা করিমগঞ্জে এই পুজো ছড়িয়ে দিতে হবে।’’ আজ সেখানে ভারতমাতার পুজোর পাশাপাশি বিশ্বশান্তি যজ্ঞও করা হয়। মণ্ডপে হাজির দেশমাতার ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয় ভোগ-প্রসাদ।