কর্নাটক নির্বাচনের মুখে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা এখন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের শাঁখের করাত। কর্নাটক নির্বাচনে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী পদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত হেগড়েকেই প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এই ব্রাহ্মণ নেতার বদলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের লিঙ্গায়েত নেতা ইয়েদুরাপ্পাকেই ‘ছায়া মুখ্যমন্ত্রী’ ঘোষণা করতে বাধ্য হন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ একটাই, রাজ্যের শক্তিশালী লিঙ্গায়েত ভোট। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পার ভাবমূর্তি নিয়ে সমস্যা থাকায় গতকাল তাঁর রীতিমতো লম্বা ‘ক্লাস’ নিয়েছেন মোদী।
মোদী-শাহ বুঝতে পারছেন এই ইয়েদুরাপ্পা সেই অতীতের কন্নড় নেতা নেই। প্রথমত, কর্নাটকে এখন ইয়েদুরাপ্পার নামের সঙ্গে দুর্নীতির বিষয় যুক্ত। রাহুল গাঁধীর প্রচারের সেটা একটা বড় অস্ত্র। ইয়েদুরাপ্পা যে এক জন জেলখাটা লোক তা বিজেপিকেও মানতে হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীও লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের বিশেষ জাতিগত মর্যাদা দাবি করে সেই ভোটে ভাঙন ধরাতে তৎপর। কংগ্রেস সরকারের লিঙ্গায়েত মন্ত্রী এইচ কে পাটিলকে দিয়ে কংগ্রেস কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলছে। তৃতীয়ত, ইয়েদুরাপ্পার বয়স এখন ৭৪। ভোটের ফল যখন প্রকাশ হবে তখন তাঁর বয়স হবে ৭৫। মোদীরই তৈরি করা নীতি অনুসারে ইয়েদুরাপ্পাকেও অবসর নিতে হবে। যে ভাবে অবসর নিতে হয়েছে নাজমা হেপতুল্লা, কলরাজ মিশ্র বা বিহারের সি পি ঠাকুরকে।
দলের মধ্যেও ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে বিদ্রোহ হয়েছে। বিক্ষুব্ধ নেতা কে এস ঈশ্বরাপ্পা ও আরও অনেকে কিছু দিন আগে এসে মোদী ও অমিত শাহের কাছে ইয়েদুরাপ্পাকে হটানোর দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য তাঁদের বলেন যে এখন ‘অস্ত্রোপচার’-এর পরিস্থিতি নেই। পারস্পরিক সমঝোতা না হলে সমস্যা হবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ দু’জনে মিলে ইয়েদুরাপ্পাকে সতর্ক করেন। ইয়েদুরাপ্পা ও বিক্ষুব্ধ ঈশ্বরাপ্পা, দু’জনকেই টিকিট দেওয়া হয়েছে। বর্তমান কোনও বিধায়ককেই বাদ দেওয়ার ঝুঁকি নেয়নি বিজেপি। যদিও তাঁদের কারও কারও জনপ্রিয়তা কমেছে বলে মনে করে দলের একাংশ। দলিত প্রার্থীও দেওয়া হয়েছে অনেক। আর বিক্ষুব্ধদের কার্যকলাপ সামলাতে আজ মোদী কর্নাটকে পাঠিয়েছেন এক নতুন ‘প্রভারী’ পীযূষ গয়ালকে।
আরও পড়ুন: সরানোর তোড়জোড়, ফুঁসছেন তোগাড়িয়া