কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী।—ফাইল চিত্র।
কর্নাটকে রাজনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত। এখনও সেখানে ‘পদ্ম ফোটানো’র চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। তার মধ্যেই এবার দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে কংগ্রেস এবং জে়ডিএস-এর মধ্যে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়াকে এখনও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেই মানেন বলে জানিয়েছেন এক কংগ্রেস বিধায়ক। আর তাতে মেজাজ হারিয়েছেন জেডিএস নেতা তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। পদত্যাগ করবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার বেঙ্গালুরুতে একটি সংবাদ সংস্থার মুখোমুখি হন কুমারস্বামী। কংগ্রেস বিধায়কের মন্তব্য নিয়ে মতামত জানতে চাইলে কুমারস্বামী বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই। তবেজোটের কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম অতিক্রম করছে ওরা। কংগ্রেসের উচিত,দলীয় বিধায়কদের সামলানো। নইলে ওদেরই ক্ষতি হবে। এমন চলতে থাকলে, পদত্যাগ করতেও আমিপ্রস্তুত।’’
সিদ্দারামাইকে মুখ্যমন্ত্রী মানেন বলে রবিবার একটি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী সি পুট্টারঙ্গ। তা নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত কংগ্রেস ও জেডিএস-এর মধ্যে। পুট্টারঙ্গ বলেছিলেন, ‘‘সিদ্দারামাইয়ার কাছে আমিঋণী। চিরকাল ওঁকেই মুখ্যমন্ত্রী মানব।’’বিষয়টি সামনে আসতেই তেড়েফুঁড়ে ওঠে জেডিএস। কিন্তু কারও ব্যক্তিগত মতামত নিয়ে ঝামেলা পাকানো উচিত নয় বলে পরিস্থিতি সামাল দিতে দেখা যায় কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা জি পরমেশ্বরকে।
কুমারস্বামীর প্রতিক্রিয়া।
আরও পড়ুন: বিদেশে পালাতে পারেন কে ডি সিংহ! তৃণমূল সাংসদের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
আরও পড়ুন: ‘হিন্দু মেয়ে’ থেকে ‘মুসলিম মেয়ে’! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পরপর বিতর্কিত মন্তব্যে টুইটার তোলপাড়
পুট্টারঙ্গের মতো তিনিও সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী মানেন বলে যদিও মন্তব্য করেননি পরমেশ্বর। তবে সিদ্দারামাইয়াকে কর্নাটকের সেরা মুখ্যমন্ত্রী বলে উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে জানান, ‘‘কুমারস্বামীর বিরুদ্ধে কারও কোনও অভিযোগ নেই। তবে কংগ্রেস পরিষদীয় নেতা সিদ্দারামাইয়া। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল দলের নেতারা। ওই বিধায়ক নিজের আবেগ প্রকাশ করেছেন মাত্র। তাছাড়া কারও ব্যক্তিগত মতামত নিয়ে আপত্তি থাকা উচিত নয়।’’ অন্যদিকে, গোটা বিতর্কে সংবাদমাধ্যমকেই দোষী ঠাহরেছেন সিদ্দারামাইয়া। কুমারস্বামীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে মন্তব্য করা হয়নি। তবে রাজ্যে ক্ষমতাসীন দুই দলের মধ্যে এই ঝামেলায় বিজেপি ঘর গুছিয়ে নিতে পারে বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। গত বছর মে মাসে কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিজেপি। ১০৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল তারা। ৮০টি আশনে জয়ী হয় কংগ্রেস। জেডিএস পায় ৩৭টি আসন। কিন্তু বিধানসভায় আস্থাভোটের আগেই ইস্তফা দেন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। সেই সুযোগে রাজ্যে সরকার গড়ে কংগ্রেস ও জেডিএস জোট। তবে এখনও পর্যন্ত বিজেপি হাল ছাড়েনি বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগেই তাদের বিরুদ্ধে বিধায়ক কেনাবেচার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁর দলের এক বিধায়ককে বিজেপির তরফে মোটা টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন কুমারস্বামী। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। জোট সরকারের কাজকর্মে তিতিবিরক্ত হয়ে জেডিএস বিধায়করা নিজে থেকেই বিজেপিতে চলে আসতে চাইছেন বলে পাল্টা দাবি করেন তাঁরা।