মঞ্জুনাথ স্বামী মন্দিরে কুমারস্বামী।
গ্রহ কুপিত হলে তাকে ঠান্ডা করতে দাওয়াই প্রয়োজন! প্রয়োজন বাস্তুশাস্ত্র, জ্যোতিষী, ঠিকুজি গণনার। কংগ্রেসই হোক বা বিজেপি — রাজনৈতিক ভিন্ন মেরুর বাসিন্দারাও কিন্তু এই দাওয়াইয়ের প্রশ্নে সহমত।
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা জ্যোতিষীর বিধান ছাড়া এক পা-ও চলতেন না। পিছিয়ে নেই নতুন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীও। পরিবার চাইছে, কিন্তু তিনি গোঁ ধরে রয়েছেন জে পি নগরের পুরনো বাসভবন ছেড়ে নড়বেন না। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নির্দিষ্ট বাংলোতে রাত্রিবাস নয় কদাচ। কারণ তাঁর জীবনের শুভ যোগাযোগগুলি সব ঘটেছে তো ওই জে পি নগরের বাড়িতেই। ওখানকার বাস্তু কুমারস্বামীর ভাগ্যের জন্য খুবই কার্যকরী।
স্থানীয় রাজনৈতিক শিবির বলছে, দেবগৌড়া পরিবারের জ্যোতিষ-নির্ভরতা ইয়েদুরাপ্পার থেকে একচুলও কম নয়, বরং কিছু ক্ষেত্রে বেশিই। প্রথমে ঠিক ছিল, গত কাল সাড়ে বারোটায় শপথ নেবেন তিনি। দিনের বেলা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান সেরে ফেললে প্রশাসনিক দিক থেকেও সুবিধা, যানজটের জন্য অধুনা ‘কুখ্যাত’ বেঙ্গালুরুর। কিন্তু এই টলোমলো রাজনৈতিক বাজারে মাহেন্দ্রক্ষণকে উপেক্ষা করার প্রশ্নই ওঠে না দেবগৌড়াদের। বারবেলার ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে বিকেল সাড়ে চারটেয় খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেই শপথ নিলেন কুমারস্বামী। একই ভাবে স্থির ছিল, বৃহস্পতিবার সকালে বিধানসভায় আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন কুমারস্বামীরা। কিন্তু এই দিনে শনি এবং রাহুর অবস্থান খুবই সন্দেহজনক! অশুভযোগে শুরু করেই টালমাটাল হয়ে যেতে পারে সরকার। কিন্তু শুক্রবারে কোনও বাধা নেই। তাই পাল্টে নেওয়া হল আস্থাভোটের সময়ও।
এর আগের বার মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ে কুমারস্বামী থাকতেন ‘অনুগ্রহ’ নামের একটি বাংলোয়। ওই বাংলোয় আগে থাকতেন দেবগৌড়া এবং তার পর কুমারস্বামীর ভাই। কিন্তু ক্রমশ বাস্তু সংক্রান্ত সমস্যার কথা উঠতে লাগল, কুমারস্বামীর রাজনৈতিক জীবনের ভালমন্দের সঙ্গে মিলিয়ে। একটা পাঁচিল দিয়ে গাড়ি রাখার জায়গা কমানো হল। পরে সেই বাড়িও ছেড়ে দেয় দেবগৌড়া পরিবার।
আরও পড়ুন: সরকার বাঁচাতে সতর্ক থাকুন, বার্তা রাহুলের
আপাতত স্থির হয়েছে, জে পি নগরের বাড়িতেই থাকবেন কুমারস্বামী। প্যালেস রোডে মুখ্যসচিবের বাংলোটির বাস্তু পছন্দ হয়েছে তাঁর স্ত্রী অনীতার। সেখানে দিনের বেলায় বিশ্রাম নেওয়া এবং জরুরি বৈঠক সারবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাত্রিবাস করতে তিনি ফিরবেন নিজের পুরনো বাড়িতেই। মুখ্যসচিবকে সে ক্ষেত্রে অন্য আবাসন দেওয়া হবে।