কেন্দ্রের বিজেপির সরকার বনাম জম্মু-কাশ্মীরের পিডিপি-বিজেপি সরকার। বিবাদের সাক্ষী রইল সুপ্রিম কোর্ট।
জম্মু-কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতির সরকার হিন্দুদের সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করছে বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলল মোদী সরকার। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের অভিযোগ, মুসলিম ছাড়া অন্য জনগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু বলে চিহ্নিত করার জন্য রাজ্য সরকার সংখ্যালঘু কমিশন তৈরি করবে বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এখন তারা চুপ। কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকও এড়িয়ে যাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন।
এর আগে মেহবুবা সরকার হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশন তৈরির কোনও পরিকল্পনা নেই। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে রাজ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। জম্মু-কাশ্মীরে মুসলিমরা কী করে সংখ্যালঘুর মর্যাদা পায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। যার পরে সংখ্যালঘুর সংজ্ঞা ও তাদের হাল পর্যালোচনা করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের একটি কমিটি তৈরি হয়। কেন্দ্রের অভিযোগ, রাজ্য এখন কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। সুপ্রিম কোর্ট আজ নির্দেশ দিয়েছেন, ৪ সপ্তাহের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
শরিক হলেও পিডিপি-বিজেপি সম্পর্ক যে মধুর নেই, আজ শীর্ষ আদালতে এই প্রকাশ্য বিবাদে ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমনিতেই সোপিয়ানে বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনার গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিবাদ চলছে। ২৭ জানুয়ারি সেনার গুলিতে দুই তরুণের মৃত্যু হয়। তার পরে গঢ়বাল রাইফেলসের মেজর আদিত্য কুমার ও সেনার ইউনিটের বিরুদ্ধে এফআইআর করে রাজ্য। তাতে ক্ষুব্ধ কেন্দ্র। মেজর কুমারের বাবা ওই এফআইআর খারিজ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সোমবার সেই মামলার শুনানি হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, অরুণাচলপ্রদেশ, পঞ্জাবের মতো রাজ্যে হিন্দুরা কেন সংখ্যালঘু তকমা পাবে না, সেই প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। দিল্লির বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়, জম্মুর আইনজীবী অঙ্কুর শর্মা শীর্ষ আদালতে বলেছেন, হিন্দুরা এই রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘু। তা সত্ত্বেও তাদের কেন সংখ্যাগুরু হিসেবে ধরা হবে। অঙ্কুরের অভিযোগ, ‘‘মেহবুবা সরকার বলছে, রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশন নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। এ থেকে স্পষ্ট, জম্মু-কাশ্মীর ধর্মনিরপেক্ষ রাজ্য নয়।’’