কাশ্মীরে বিক্ষোভ সামলাতে আপাতত যে সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর উপরেই ভরসা করছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল আগেই। তাই ভূস্বর্গে মৃত্যুর মিছিল থামারও লক্ষণ নেই। আজ বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন দুই যুবক। এ নিয়ে সাম্প্রতিক অশান্তিতে কাশ্মীরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭৮। মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও মানছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সহজ। জম্মু-কাশ্মীর সামলানো সহজ নয়।’’
কাল শ্রীনগর-সহ কিছু এলাকায় ফের কার্ফু জারি করা হয়েছিল। আজ শ্রীনগর থেকে কার্ফু তোলা হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভ থামেনি। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ ও শোপিয়ানে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। অনন্তনাগের বোতেঙ্গু গ্রামে পুলিশের ছররা গুলির আঘাতে মারা গিয়েছেন ২৩ বছরের ইয়াওয়ার বাট। শোপিয়ানে কাঁদানে গ্যাসের শেল মাথায় লেগে নিহত হয়েছেন ২৫ বছরের সায়র আহমেদ শেখ। ছররা গুলির বদলে লঙ্কার গুঁড়ো ভর্তি পাভা শেল ব্যবহারের সুপারিশ করেছে কেন্দ্রের উচ্চপর্যায়ের কমিটি। কিন্তু ছররা বন্দুক যে পুরোপুরি তুলে দেওয়া হবে না তাও স্পষ্ট করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ফের ছররার আঘাতে মৃত্যু নিয়ে বিক্ষোভ বাড়বে বলেই মত প্রশাসনের।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় অস্বস্তিতে মেহবুবা। আগে রেগে সাংবাদিক বৈঠক ছে়ড়ে গিয়েছিলেন। আজ সুর বদলেছেন। মেহবুবার মতে, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী মিলে করতে পারবেন না। গোটা দেশকেই এ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। অনেকের মতে, সুর চড়িয়ে যে লাভ হয়নি বুঝেই মেহবুবা এখন সুর পাল্টে সকলের সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত কনফারেন্সকেও এক হাত নিয়েছেন তিনি। মেহবুবার মতে, হুরিয়ত অন্ধকারে হাতড়াচ্ছে। তার বদলে দিল্লির সর্বদলীয় প্রতিনিধিমণ্ডলীর সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। সে ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের গ্রহণযোগ্য নীল নকশাও তৈরি করা যেত।
এক বিরোধী নেতার কটাক্ষ, ‘‘মেহবুবাই আসলে অন্ধকারে হাতড়াচ্ছেন। তাঁর ডাকে কেউ আর সাড়া দিচ্ছে না।’’