সেনা হেফাজতে হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকের জন্য অনন্ত অপেক্ষায় দিন গুনছেন এক অষ্টাদশী।
মেহরুন্নিসা আর বছর ২৪-এর তরুণ মনজুর আহমেদের শেষ কথা হয়েছিল গত বছর ৩১ অগস্টের রাতে। কুপওয়ারা জেলার লোলাব এলাকায় ত্রেমুখ বেক গ্রামের বাসিন্দা মনজুর। সেখানকারই এক সেনা শিবিরে আটক করা হয়েছিল এই যুবককে। সন্দেহভাজন মনে করে অনেক সময়ই এ ভাবে যুবকদের আটক করে সেনা। কাশ্মীরে এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। গত ২৮ বছরে এমনটা বারবারই ঘটেছে।
সে দিন সেনা শিবিরে নিয়ে যাওয়ার আগে মেহরুন্নিসার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন মনজুর। প্রেমিকাকে আশ্বাস দেন, ‘‘ফিরে এসে ইদ কাটাব একসঙ্গে।’’ সেই ছিল তাঁদের শেষ কথা। তার পর থেকে আর কোনও খোঁজ মেলেনি মনজুরের। তাঁকে ফোন করলেও কোনও সাড়া মেলেনি।
তবু হাল ছাড়েনি মেহেরু আর মনজুরের পরিবার। ছেলের খোঁজ পাওয়ার জন্য সব রকম চেষ্টা করে চলেছেন তাঁরা। মন্ত্রী, আমলা থেকে পুলিশ, দোরে-দোরে ঘুরছেন তাঁরা। নিয়মিত সেনা ঘাঁটিতে গিয়ে জানার চেষ্টা করছেন। এখনও লাভ হয়নি।
আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন মেহেরুও। পরিবারের বাকিরা যা-ই বলুক না কেন, তাঁর বিশ্বাস মনজুর এখনও বেঁচে আছেন। রোজ অন্তত ২০ বার প্রেমিকের মোবাইলে ফোন করেন মেহেরু। যদি হঠাৎ ও পার থেকে শোনা যায়, চেনা গলাটা। তিন বছর আগে থেকে তাঁদের সম্পর্ক। দু’বাড়ির মতে বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এ বছর দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা দেবে মেহেরু। তার পরেই ওঁদের বিয়ের কথা ভেবেছিল দুই পরিবার। মেহেরুর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম ওরা হয়তো মনজুরকে কয়েক দিন বাদেই ছেড়ে দেবে। ছ’মাস পেরিয়ে গেল, এখনও ও ফিরল না।’’ তবুও ঈশ্বরে আস্থা হারাননি মেহেরু। এখনও স্বপ্ন দেখেন, মনজুর ফিরে আসবেন। বিয়ে হবে তাঁদের।