গ্রিসের উদাহরণকে সামনে রেখে দিল্লিতেও গণভোটের দাবি তুললেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিতে দীর্ঘদিন ধরেই চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন তিনি। এ বার সেই বিষয়টিকেই নতুন মোড়কে হাজির করলেন তিনি।
দিল্লিতে ৭০ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় ৬৭টি আসন দখল করেছে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি। তবু সরকারের কাজ চালাতে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে নিয়মিত আপের সংঘাত লেগে রয়েছে। দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ ও কেজরীবালের সম্পর্ক এ নিয়ে কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। এ সময়ে সুযোগ বুঝে পূর্ণ রাজ্যের রাজনৈতিক দাবি সামনে নিয়ে এলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লি দেশের একটি রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও অন্য রাজ্যগুলির মতো কাজের ক্ষমতা তার নেই। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। এমনকী, দিল্লির ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাও কেজরীর হাতে নেই। এ সব নিয়েই ক্ষোভ এবং রাজনীতি। তবে অনেকেই মনে করেন, দিল্লি যে হেতু দেশের রাজধানী, তাই এখানে নিয়ম কিছুটা আলাদা হতেই পারে। সব দিক বিবেচনা করেই সরকারের এগোনো উচিত। আর কেজরীবালও কিছু দিন ধরেই এ বিষয় নিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে চলেছেন। তাঁর দাবি, দিল্লির সরকার বকলমে চালানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বার কেজরীবাল দিল্লির নগরোন্নয়ন দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন, দিল্লিতে গ্রিসের মতো গণভোট করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে। দিল্লির মানুষ পূর্ণ রাজ্যের পক্ষে কি না, এতেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আপ নেতা আশিস খেতান মন্তব্য করেছেন, ‘‘গণভোটের বিষয়টি খুবই প্রয়োজনীয়।’’
বিধানসভা ভোটে যে ভাবে ব্যাপক জনসমর্থন পেয়েছেন, সে ভাবে গণভোটের ফলাফলও তাঁর পক্ষেই যাবে বলে মনে করছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তবে কংগ্রেস এই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে। দলের নেতা অজয় মাকেন মন্তব্য করেছেন, ‘‘গণভোটের এই প্রস্তাব সংবিধানের বিরোধী। এটা জাতীয় স্বার্থবিরোধীও।’’
বিভিন্ন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এর আগে জনতার রায় নেওয়ার কথা তুলে ধরতেন আপ নেতা। তবে দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বিরাট বাংলো কিংবা বিদ্যুতের বিল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যাওয়ায় কেজরী বিরোধীদের কটাক্ষ, এই সব কাজ মুখ্যমন্ত্রী কি জনতার রায় নিয়েই করছেন?
চাপের মুখে কেজরীবাল আবার টেনে এনেছেন জনতার রায় নেওয়ার কথা। যা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়ে গিয়েছে।