উত্তরপ্রদেশের ভোট শুরুই হয়নি। দিন পনেরোর ছুটিতে চললেন অরবিন্দ কেজরীবাল।
সুগারের চিকিৎসার জন্য পাড়ি দিচ্ছেন বেঙ্গালুরুতে। এই নিয়ে ভুগছেন অবশ্য অনেকদিন ধরে। কিন্তু এমন একটি সময়ে ছুটি কী নিশ্চিন্তের? উত্তরপ্রদেশের ভোটে তাঁর কোনও লেনদেন নেই। তবে বাজি ধরেছিলেন পঞ্জাব আর গোয়াতে। বিশেষ করে পঞ্জাবে। আর বিভিন্ন সমীক্ষাই বলছে, বাকিদের পিছনে ফেলে সেখানে এগিয়ে রয়েছেন কেজরীবালই।
সেই সম্ভাবনাই এখন কপালে ভাঁজ ফেলেছে কংগ্রেসের। তা এতটাই, যে খোদ রাহুল গাঁধী পঞ্জাবের নেতাদের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। কংগ্রেস সূত্রের মতে, পঞ্জাবে রাহুলের ঘোষিত মুখ্যমন্ত্রী মুখ ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ ভোটের পরেও সনিয়া গাঁধীকে বলেছেন, জয় নিশ্চিত কংগ্রেসেরই। কিন্তু ক্যাপ্টেন-বিরোধী অনেকেই মনে করেন, দিল্লিতে কেজরীকে উপেক্ষা করে যে ভুল হয়েছিল, পঞ্জাবেও সেটিই হতে চলেছে। হিন্দু এলাকায় যতটা নয়, শিখ এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে প্রকাশ সিংহ বাদলের বদলা নিতে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারে আপ।
ভোট চলার সময়ই অম্বিকা সোনি, পবন বনশল, মণীশ তিওয়ারির মতো নেতারা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, কেজরীবালকে খাটো করে দেখা উচিত নয়। দিল্লিতেও তাঁকে উপেক্ষা করার কৌশল নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেজরী-ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। এমনকী নরেন্দ্র মোদীর দল খোদ দিল্লিতে কোনও রকমে টিমটিম করে জ্বলেছে। কেজরীর আকস্মিক উত্থান আঁচ করে মোদীও তাঁকে আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন। যাতে কেজরীর গুরুত্ব বাড়িয়ে কংগ্রেসকে খাটো করা যায়।
অনেকেই মনে করছেন, এ বার দিল্লির পরে পঞ্জাবে যদি কেজরীবাল বাজি মারতে পারেন, তা হলে কংগ্রেস ও বিজেপির পর আপই একমাত্র দল হবে, যারা একাধিক রাজ্যে সরকার গড়তে চলেছে। আর দিল্লিতে পুলিশ ও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পেতে এত লড়তে হয় কেজরীকে, এই প্রথম পঞ্জাবেও সেই সুযোগ আসবে দলের হাতে। সমীক্ষা বলছে, ২০১২ সালের বিধানসভা ভোটে পঞ্জাবের ময়দানে যখন আপ ছিল না, তখন অকালি জোট ৬৮ টি আসন পেয়েছিল, কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল ৪৬ টি। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে অকালির জিতেছিল ৪৫টি আসনে, কংগ্রেস জেতে ৩৭টি আসনে। আর আপ প্রথমবার ময়দানে নেমেই ৩৩ টি আসনে এগিয়ে ছিল। অবশ্য পঞ্জাবের ১৩ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪টি পেয়ে গিয়েছিল তারা। লোকসভা ভোটের সময় মোদী হাওয়ার মধ্যেই অকালির বিরুদ্ধে জনমতকে থেকেই কাজে লাগাতে শুরু করেছিলেন কেজরী। আর এখন সেই ঝড় থেমে যাওয়ার মুখে আপের জোর বাড়বে বলেই ভোট সমীক্ষা জানাচ্ছে।
পঞ্জাব ও গোয়ার ভোটের দিনই কেজরীবাল বলেছিলেন, ওই দুই রাজ্য ইতিহাস গড়তে চলেছে। ফল বেরোতে এক মাসেরও বেশি সময় বাকি। ফলে জল্পনা বেড়েছে, সত্যিই কী দিল্লির পর পঞ্জাবের দখল নিয়ে ইতিহাস গড়তে চলেছেন কেজরীবাল?