সূচনা: কোচি মেট্রোর উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, রাজ্যপাল পি সদাশিবম। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
কলকাতা দিয়ে শুরু। সেই ১৯৮৪-তে। ৩৩ বছরে মেট্রো রেল এখন দেশের ৮টি শহরে। কোচিতে আজ যাত্রা শুরু করল অষ্টম মেট্রো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যার উদ্বোধন করলেন। আধুনিক পরিবহণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একে ম়ডেল হিসেবে তুলে ধরলেন তিনি। কারণ, মেট্রো কুলে কনিষ্ঠ হলেও কোচি মেট্রো নানা দিক দিয়েই দেশের মধ্যে প্রথম।
প্রথম দৈর্ঘ্যে। পালারিভট্টম থেকে আলুভা, প্রথম থেকেই ১৩.৪ কিলোমিটার দূরত্ব পেরোবে এই মেট্রো। আগের কোনও মেট্রোয় প্রথম দফাতেই এতটা পথে মেট্রো চলেনি।
প্রথম নির্মাণ কালে। এটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৪ বছর ১০ দিনে। যা একটি জাতীয় রেকর্ড।
প্রথম সৌর বিদ্যুতে। নিজেরাই সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করে এই মেট্রো তার ৩৫ শতাংশ চাহিদা মেটাবে।
আরও পড়ুন: কলকাতা বা দিল্লিতে নেই, কোচি মেট্রো যেখানে দেশে প্রথম
প্রথম মহিলা কর্মীর সংখ্যায়। এখানে অধিকাংশ কর্মী মহিলা। ৫০০ জন। জনসংযোগ ও কেটারিংয়ের মতো পরিষেবা তাঁদের হাতে।
প্রথম বৃহন্নলা কর্মী নিয়োগেও। দেশের বাকি সাত শহরের মেট্রো পরিষেবার তুলনায় শুরু থেকেই অন্য পথে হেঁটেছে কোচি মেট্রো রেল লিমিটেড। টিকিট কাউন্টার ও স্টেশন পরিচ্ছন্ন রাখার মতো কাজে ২৩ জন বৃহন্নলা কর্মী নিয়োগ করেছে এরা। ।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতেও। এই মেট্রোকে নিয়ন্ত্রণ করবে ‘কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল টেকনোলজি’। সর্বাধুনিক এই ব্যবস্থার সাহায্যে ভবিষ্যতে চালকবিহীন ট্রেনও চালানো সম্ভব হবে।
সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিষেবা চালু হবে ১৯ জুন থেকে। ভোর পাঁচটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মোট ১৯ ঘণ্টা চলবে ট্রেন। ১৩.৪ কিলোমিটার পেরোবে ২৩ মিনিটে। সড়কপথে যেতে লাগে ৪৫ মিনিট। তবে স্থলেই থমকে থাকছে না কোচি মেট্রো। কেরলের ১০টি প্রত্যন্ত দ্বীপের মধ্যেও তারা যোগাযোগ গড়ে তুলবে ৮১৯ কোটি টাকা খরচ করে। ১০০ জন করে যাত্রী ধরে এমন দু’টি ক্যাটামেরন ব্যবহার হবে এই ওয়াটার মেট্রো সার্ভিসের জন্য। ভাসমান জেটি ও অন্যান্য কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ। আগামী বছরের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে জল-মেট্রো।
কোচি মেট্রো একটি যৌথ প্রকল্প। কেন্দ্র দিয়েছে ২ কোটি টাকা। সমান অর্থ দিয়েছে রাজ্যও। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে পাশে নিয়ে আজ পালারিভট্টম স্টেশন থেকে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে একেবারে বিতর্কহীন রাখা যায়নি এই অনুষ্ঠান। প্রকল্পটির সঙ্গে গোড়া থেকেই যুক্ত ছিলেন ই শ্রীধরন। গোটা দেশ যাঁকে এক ডাকে ‘মেট্রো ম্যান’ হিসেবে চেনে। কৃতী ভূমিপূত্রের নাম আমন্ত্রিতের তালিকায় না থাকায় প্রবল আপত্তি ওঠে স্থানীয় মহলে। শেষে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে জট কাটে। এ দিন মঞ্চে তাঁর নাম ঘোষণা হতেই জয়ধ্বনি ওঠে ‘‘মেট্রোম্যান মেট্রোম্যান...।’’ পরে বিজেপির রাজ্য শাখার সভাপতি মোদীর সঙ্গে মেট্রোয় উঠে পড়াতেও আর এক দফা বিতর্ক হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে— অভিযোগ তোলেন কেরলের এক মন্ত্রী।