Kerala High Court

‘ছেলে আলাদা রেখেছে’, বৃদ্ধ স্বামীকে নিজের কাছে রাখতে আদালতে কড়া নাড়লেন অশীতিপর বৃদ্ধা

মামলা শুনে ৯২ বছরের বৃদ্ধ এবং ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে আবার একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিল কেরল হাই কোর্ট। বলল, ‘‘আমৃত্যু দম্পতির পাশে আছি আমরা।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কোচি (কেরল) শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৪৮
Share:

কেরল হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

পারিবারিক বিবাদের জন্য পৈতৃক বাড়িতে থাকেন না ছেলে। বাবাকে নিয়ে তিনি থাকেন নিজের তৈরি বাড়িতে। মা থাকেন পুরনো বাড়িতে। অসুস্থ স্বামীকে তাঁর নিজের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য আদালতের দরজায় কড়া নাড়লেন বৃদ্ধা। যে মামলা শুনে ৯২ বছরের বৃদ্ধ এবং ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে আবার একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দিল কেরল হাই কোর্ট। আদালত বলল, ‘‘আমৃত্যু দম্পতির পাশে আছি আমরা।’’

Advertisement

৯২ বছরের বৃদ্ধ ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। তাঁর অশীতিপর স্ত্রী-ও অসুস্থ। জীবন সায়াহ্নে আর আলাদা থাকতে চান না স্ত্রী। আদালতে তিনি জানিয়েছিলেন, ছেলের কাছ থেকে তাঁর কাছে স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যদিও ছেলের দাবি, পৈতৃক বাড়িতে অনেক ঝামেলা। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ রয়েছে। প্রতিবেশীরা তাঁদের উপর যে কোনও সময় হামলা করতে পারেন। নিরাপত্তার কথা ভেবেই বাবাকে তিনি নিজের কাছে রেখেছেন। মাকেও আসতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে আসতে রাজি নন। অন্য দিকে বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ছেলের জন্য স্বামী তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা একসঙ্গে থাকতে চান।

দুই পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শোনার পর কেরল হাই কোর্টের বিচারপতি দেবন রামচন্দ্রনের বেঞ্চ নির্দেশে বলে, অবিলম্বে পুরনো বাড়িতেই থাকবেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। ছেলে চাইলে সেখানে থাকতে পারেন। আবার মাঝেমধ্যে গিয়ে দেখাশোনাও করে আসতে পারেন। কিন্তু দম্পতিকে আলাদা আলাদা বাড়িতে রাখা যাবে না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্মৃতিভ্রংশ হওয়া বৃদ্ধ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে থাকলে খুশিতে থাকবেন। নিজেদের ভাল স্মৃতির কথা ভাগ করে নিতে পারবেন। কোনও ভাবে ছেলে তাঁর বাবা-মাকে এ ভাবে আলাদা করে রাখতে পারেন না।

Advertisement

অন্য দিকে, ছেলের দাবি, মা অসুস্থ। তিনি কী ভাবে বাবার খেয়াল রাখবেন? তাই তিনি বাবাকে নিজের কাছে রেখেছেন। মা চাইলে তাঁর কাছে এসে থাকতে পারেন। কিন্তু পুরনো বাড়িতে গেলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়বেন বাবা। সেখানে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক একেবারেই ভাল নয়। তাঁর অভিযোগ, বোনের ‘ইন্ধনে’ মা আদালতে এমন আর্জি নিয়ে গিয়েছেন। যদিও শেষমেশ দম্পতিকে একসঙ্গে ওই পুরনো বাড়িতে থাকার কথাই বলেছে আদালত। বিচারপতি জানান, ওই দম্পতি কেমন থাকেন, প্রতি মাসে সে সম্পর্কে রিপোর্ট জমা করতে হবে কোর্টে। ছেলে যদি মনে করেন যে, প্রতিবেশীরা তাঁদের উপর হামলা করতে পারেন, তিনি পুলিশি নিরাপত্তা চাইতে পারেন। কিন্তু দম্পতিকে আর আলাদা রাখা যাবে না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১৯ নভেম্বর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন