হাদিয়া ও তাঁর স্বামী শফিন
বিজেপিতে যোগ দিলেন অখিলা অশোকন ওরফে হাদিয়ার বাবা কে এম অশোকন। বছর দুয়েক আগে ‘লভ জিহাদ’ বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল কেরলের এই মেয়েটি।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন অশোকন। সোমবার শবরীমালা মন্দির চত্বরে এক দলীয় শিবিরে তাঁর হাতে সদস্যপত্র তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি বি গোপালকৃষ্ণন। অশোকন জানান, শবরীমালা মন্দিরে মেয়েদের প্রবেশ বন্ধ করতে বিজেপি যে আন্দোলন করছে, তাতে সক্রিয় ভাবে অংশ নেবেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বহু দিন ধরে আমি সিপিএমের সদস্য ছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি দেখছি, ভোট-ব্যাঙ্ক বাড়াতে ধর্ম নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে ওরা। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’
২০১৬ সালে অখিলার সঙ্গে একটি শফিন জহান নামে এক মুসলিম ছেলের বিয়ে নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল দেশে। অশোকন দাবি করেছিলেন, এটা বিয়ে নয়, ‘লভ জেহাদ’। অর্থাৎ, অ-মুসলিম মেয়েদের ধর্মান্তরিত করে আইএস জঙ্গি বানানোর কৌশলমাত্র। তাঁর আর্জি মেনে নিয়ে কেরল হাইকোর্ট জানায়, এই বিয়ে বৈধ নয়। অখিলাকে (ধর্মান্তরিত হওয়ার পরে যার নাম ‘হাদিয়া’) ফিরে যেতে হবে বাবার কাছেই। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান শফিন। হাদিয়ার সঙ্গে কথা বলেন মহিলা কমিশনের সদস্যরাও। হাদিয়াও আদালতে জানান, তাঁকে কেউ জোর করে ধর্মান্তরিত করেনি। শফিনকে তিনি ভালবাসেন। তাঁর সঙ্গেই ঘর করতে চান। শীর্ষ আদালত হাদিয়ার দাবি মেনে নেয়। সেই থেকে শফিনের সঙ্গেই সংসার করছেন হাদিয়া। এখন তিনি হোমিয়োপ্যাথি নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
আরও পড়ুন: লুট হয়েছে সব! আত্মহত্যা করার আগে লিখেছিলেন চাষি
তাঁর বিয়ে নিয়ে গন্ডগোলের সময়েই হাদিয়া দাবি করেছিলেন, কেউ বা কারা তাঁর বাবার মগজধোলাই করছে। তাই তিনি কিছুতেই মেয়ের এই বিয়ে মেনে নিতে পারছেন না। হাদিয়া তখন বলেছিলেন, ‘‘চিরকাল জেনে এসেছি, বাবা ধর্মে বিশ্বাস করেন না। আমি কোন ধর্মের ছেলেকে বিয়ে করছি, তা কখনওই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে না। তিনি যখন এত বিরোধিতা করছেন, তখন নিশ্চয় তাঁর উপর কোনও বিশ্বাস জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ আজ অশোকন জানান, চার বছর ধরে তিনি বিজেপিকে সমর্থন করছেন।
আজ সাংবাদিকদের সামনে অশোকন বলেন, ‘‘হিন্দুদের সমর্থনে কোনও কথা বললেই সবাই মনে করে, লোকটা সাম্প্রদায়িক।’’ শবরীমালা বিতর্ক নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেরলের বেশির ভাগ হিন্দুর মতো আমিও বিষয়টি নিয়ে দ্বিধায় ভুগেছি। কিন্তু এত দিনের একটা রীতি তো আদালত পাল্টে ফেলতে পারে না। যা সিদ্ধান্ত ধর্মীয় নেতাদেরই নিতে দিতে হবে।’’