প্রতীকী ছবি।
পণ দিতে না পারায় এক গৃহবধূকে ঠিকমতো খেতে না দিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মৃত্যুর সময় তাঁর ওজন ছিল মাত্র ২০ কিলোগ্রাম। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই গৃহবধূর নাম তুষার। তিনি কেরলের করুণাগাপল্লির বাসিন্দা।
২০১৩-য় চাঁদুলালের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তুষারের। দেড় ও তিন বছরের দুটো সন্তান রয়েছে তাঁদের। কোনও স্থায়ী কাজ ছিল না চাঁদুলালের। যখন যা কাজ পেতেন তাই করতেন। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে ঝালাইয়ের কাজও করতেন চাঁদু।
অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য তুষারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন তো বটেই, তুষারের খাওয়াদাওয়াও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।
আরও পড়ুন: মহিলা ড্রাগ ইনস্পেক্টরকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে মাঝে মধ্যে পান্তা ভাত আর চিনিগোলা জল খেতে দেওয়া হত তুষারকে। গত পাঁচ বছর ধরে এটাই ছিল শ্বশুরবাড়ির বেঁধে দেওয়া ওই গৃহবধূর খাদ্যতালিকা। প্রয়োজন মতো এবং প্রতি দিন খাবার না পাওয়ায় ধীরে ধীরে শরীর ভেঙে পড়েছিল তাঁর। গত ২১ মার্চ রাতে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন তুষার। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মেয়েকে ‘খুন’ করার অভিযোগ আনেন তুষারের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, বিয়ের সময় সোনার গয়না, টাকা দিয়েছিলেন চাঁদুকে। কিন্তু আরও টাকা দেওয়ার জন্য তুষারের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তুষারের মা বিজয়লক্ষ্মী বলেন, “গত এক বছর মেয়েকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। মেয়ের বিপদ আর যাতে না বাড়ে সেই ভয়ে পুলিশেও অভিযোগ জানাইনি।”
তুষারের প্রতিবেশীদের দাবি, প্রায় দিনই ওই পরিবারে অশান্তি লেগে থাকত। তুষারকে মারধর করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তাঁরা আরও জানান, গত পাঁচ বছর ধরে এটাই ছিল নিত্যদিনের ছবি।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে অসুস্থতার জন্য নয়, অনাহারেই মৃত্যু হয়েছে ওই গৃহবধূর। এক পুলিশ অফিসার জানান, অনাহারে অস্থিচর্মসারে পরিণত হয়েছিল মহিলার শরীর। ওজন ছিল মাত্র ২০ কেজি। তুষারের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদুলাল ও তাঁর মা গীতালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)