প্রতীকী ছবি।
তাঁদের অপহরণকে ঘিরে গত কয়েকদিনে উত্তাল হয়েছে ত্রিপুরার প্রাক্-নির্বাচনী রাজনীতি। বিরোধী বিজেপি থেকে কংগ্রেস, সকলেই এই ঘটনাকে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনমন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এমনকী বিজেপি নেতা সুদীপ রায়বর্মন এই অপহরণকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী-নিবাস ঘেরাওয়ের হুমকিও দেন। এখন ওই চার ব্যাঙ্ককর্মী আজ সকালে সুস্থ শরীরে ঘরে ফিরে আসার পর প্রশ্ন উঠেছে, অপহরণটা কি আদৌ অপহরণ, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও ঘটনা রয়েছে। নাকি শেষ পর্যন্ত ‘মুক্তিপণ’ মিটিয়ে দিয়েই মুক্তি পেয়েছেন তাঁরা।
আজ সকালে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চার কর্মী—তনুময় ভট্টাচার্য, সুজিত দে, রক্তিম ভৌমিক ও সুব্রত দেববর্মা নিজেদের বাড়িতে ফেরেন। তাঁদের অপহরণ নিয়ে তাঁরা নিজেরা তো মুখ খোলেননি, নীরব পুলিশও। পুলিশের এক সূত্রের দাবি, পুলিশের কাছেও নাকি তাঁরা কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা তো দূরের কথা, বরং তাঁদের বাড়ির লোকেরা সংবাদ মাধ্যমের উপরেও চড়াও হন। আর যে রাজনীতিকরা কাল পর্যন্তও সরব ছিলেন, তাঁরাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
গত ২৪ নভেম্বর থেকে এই চার ব্যাঙ্ক কর্মী নিখোঁজ ছিলেন। পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁদের বা়ড়ির লোকজন। দীর্ঘ বারো বছর পর রাজ্যে অপহরণের ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। তল্লাশি অভিযানে নামে পুলিশ। তৈদুর ওই শাখাটিও গত কয়েকদিন ধরে বন্ধ রাখেন গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। গত কাল ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ‘সহকর্মীদের’ খুঁজে বের করার দাবি জানান।
নিখোঁজদের মধ্যে একমাত্র ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুব্রত দেববর্মাই টিভি চ্যানেলে মুখ খোলেন। জানান, গাড়ির সামনে গাছ ফেলে বন্দুক দেখিয়ে তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণকারীরা কত জন ছিল, তাদের সঙ্গে এ ক’দিনে কী কথা হয় সে সম্পর্কে সুব্রত কিছুই বলতে পারেননি। যা বলেছেন তা-ও অসংগতিতে ভরা। তাঁর দাবি, গত রাতে টিলার উপরে তাঁদের ছেড়ে দিয়ে কোন দিকে যেতে হবে তা বলে দেয় অপহরণকারীরা। কেন তাঁদের অপহরণ করা হল, কেনই বা ছেড়ে দেওয়া হল, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।