৫১ লক্ষ টাকার বিনিময়েই মুক্তি মিলেছে তাঁদের। শেষ পর্যন্ত অপহৃতরাই স্বীকার করলেন এই মুক্তিপণের কথা। ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চার কর্মীকে নিরাপদে ছাড়িয়ে এনেই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুরোদমে মাঠে নামল ত্রিপুরা পুলিশ। আজ অপহরণকারী সন্দেহে মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ সুজিত দে ও রক্তিম ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরাই জানান, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তনুময় ভট্টাচার্য ও তাঁদের দু’জনের পরিবার সব মিলিয়ে মুক্তিপণ বাবদ মোট ৫১ লক্ষ টাকা দিয়েছে। অপহরণকারীদের নির্দেশ মতো তাঁদেরই সঙ্গে বন্দি হওয়া চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুব্রত দেববর্মার ভাইয়ের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হয়। তাঁর কাছ থেকেই অপহরণকারীরা সেই অর্থ সংগ্রহ করে। তারপরেই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। অপহরণকারীদের নির্দেশ মতো তেলিয়ামুড়ায় সুজিতবাবুর ভাই ও রক্তিমবাবুর বাবা গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। সেখান থেকেই তাঁদের নিয়ে বাড়ি ফেরেন। পুলিশকেও অপহরণকারীদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য তাঁরা জানিয়েছেন।
আজ সকালে পুলিশ আগরতলা পশ্চিম থানা এলাকার কৃষ্ণনগর থেকে জ্ঞান দেববর্মা ও রাকেশ দেববর্মাকে গ্রেফতার করে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা পায়। রাতে রাকেশের বাড়িতে মাটি খুঁড়ে বাকি টাকা উদ্ধার হয়। সূত্রের বক্তব্য, যে নোট অপহরণকারীদের দেওয়া হয়েছিল, নম্বর মিলিয়ে দেখা গিয়েছে এই টাকা তারই অংশ। ডিআইজি অরিন্দম নাথ নিউ ক্যাপিটাল থানায় গিয়ে ধৃতদের জেরা করে। তার ভিত্তিতে খোয়াই জেলার তেলিয়ামুরা থেকে সুরেন্দ্র দেববর্মা ও লক্ষ্মীচরণ দেববর্মা নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। গোমতী জেলার তৈদু এবং বীরগঞ্জ এলাকা থেকেও ধরা হয় আরও দু’জনকে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছেন, অপহৃতদের নিরাপদে ছাড়িয়ে না এনে পুলিশি ‘অ্যাকশন’ শুরু করা যাচ্ছিল না। তাতে তাঁদের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা ছিল। সে কারণেই মুক্তিপণ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ধৃতদের জেরা চলছে। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এরা সবাই আত্মসমর্পণকারী জঙ্গি। কেন তারা ফের ‘অপহরণ’ চক্র গড়া তুলল পুলিশ তাও খতিয়ে দেখছে।