Amrinder Singh

Captain Amrinder singh: মন কষাকষি দূরে সরিয়ে প্রচারে মহারানিও! ‘বুড়ো রাজা’ কি পারবেন এ বার ভেল্কি দেখাতে?

রাজার যে আর গদি নেই! তাতে কী? মুখ্যমন্ত্রীর গদি গিয়েছে যাক। পটিয়ালার মহারাজা তো উনিই। তিনি ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

পটিয়ালা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:২৮
Share:

ভোট প্রচারে অমরিন্দর সিংহ। নিজস্ব চিত্র

বাজা তোরা, রাজা যায়!

Advertisement

সঙ্গে কে যায়? মহারানি। ওই যে, চোখে কালো রোদচশমা। প্রণিত কউর। পটিয়ালার সাংসদ।

রাজার যে আর গদি নেই! তাতে কী? মুখ্যমন্ত্রীর গদি গিয়েছে যাক। পটিয়ালার মহারাজা তো উনিই। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ।

Advertisement

রাজা না ক্যাপ্টেন? সেনার ক্যাপ্টেন ছিলেন। রাজার বেটা হয়েও সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। পঁয়ষট্টিতে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিলেন।

গদি গেল কেন? মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বটে সাড়ে চার বছর। তবে কাজকর্ম বিশেষ করেননি। ড্রাগের কারবার, বালি মাফিয়া, প্রশাসনে দুর্নীতি কিছুই বন্ধ করতে পারেননি। তাঁর মন্ত্রী-সান্ত্রীদের চুরির ঠেলায় কোষাগার ফাঁকা। পঞ্জাবের প্রজারা ফুঁসছিল।

আর পটিয়ালার প্রজারা? তাঁদের দেখভাল তো মহারানি করেন। রাজাসাহেবকে সাড়ে চার বছরে সাড়ে চার বার পটিয়ালার লোকে চোখে দেখেছে কি না সন্দেহ। মহারানি থাকেন পটিয়ালায়। মহারাজ থাকেন চণ্ডীগড়ের সিসওয়ানে খামার বাড়িতে। পাকিস্তান থেকে বান্ধবী আরুশা আলম পঞ্জাবে বেড়াতে এলে ওই খামার বাড়িতেই বসে গল্পগুজব করেন।

মহারানি গোঁসা করেন না? রাজারাজড়াদের অমন হয়। অমরিন্দরের ঠাকুর্দা মহারাজ ভূপিন্দর সিংহের নাম শুনেছেন? পটিয়ালার কিলা মুবারকে তাঁর হারেমে ৩৬৫ জন পত্নী-উপপত্নী ছিলেন। বিয়ে করেছিলেন দশ বার। সন্তান ছিল ৮৮টি। অমরিন্দর সিংহও দিলদরিয়া মানুষ। তবে মহারানি ও সব পছন্দ করেন না। নিন্দুকেরা বলে, খুব মন কষাকষি দু’জনের।

বাজারে বাজা, সবাই ঢোল, নাগরা বাজা।

রাজামশাই কোথায় চললেন? ভোটের প্রচারে। বোধ হয় জীবনের এটাই শেষ রাজনৈতিক লড়াই। আশি বছর বয়সে এক বার শেষ চেষ্টা। যদি বুড়ো হাড়ে লাগে ভেলকি। কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল করেছেন। পঞ্জাব লোক কংগ্রেস। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। রাজাসাহেবের পাশে এ বার দেশের প্রধানমন্ত্রী। দু’জনে মিলে পঞ্জাব দখল করতে চান। তা হলে রাজাসাহেবের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসার হ্যাটট্রিক হয়।

সঙ্গে মহারানিও রয়েছেন দেখছি। মন কষাকষি মিটে গেল? ভোট বড় বালাই। মহারানি প্রণিত কউর, রাজকন্যা জয়ইন্দর কউর সবাই এখন প্রচারে। কিন্তু স্বামীর জন্য প্রচার করতে গিয়ে মহারানির সাংসদ পদটি বোধহয় খোয়াই গেল এ বার!

কেন? প্রণিত কউর তো কংগ্রেসের সাংসদ। এ দিকে স্বামীর জন্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে প্রচার করছেন। দলবিরোধী কাজের জন্য কোপ পড়ল বলে!

মহারাজ জিতবেন কি? পটিয়ালা শহরের মানুষ হয়তো ভোট দেবেন।

শহরটা তো তাঁদের ফুলকিয়াঁ রাজবংশের হাতেই সাজানো। ফুল সিংহ জয়সলমেরে রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার পর রাজপরিবার পটিয়ালায় এসে উঠল। ওই যে কিলা মুবারক, মোতি বাগের প্রাসাদ, শীস মহল, সব তাঁদের হাতেই তৈরি। অমরিন্দর সিংহও পটিয়ালার জন্য এক কালে অনেক করেছেন। তবে আশেপাশের গ্রামের মানুষ, শহরের আম আদমি কিছুই পায়নি বলে নালিশ করে। তাঁরা এ বার সবাই মিলে আম আদমি পার্টিকে ভোট দিতে চায়।

তা হলে তো বিপদ! পঞ্জাবের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী কি না পরাজিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়বেন? দেখুন, অকালি দল সাহায্য করে কি না! অমরিন্দর যে নিজেও এক সময়ে অকালি দলে ছিলেন, সেটা জানেন তো!

অকালি দলকে হারিয়েই তো রাজাসাহেব দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কোলাকুলি কবে হল ভাই? কোলাকুলি নয়। সব ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন