National News

আমি র-এর চর, শেখানো বুলির মতো আউড়ে যাচ্ছিলেন কুলভূষণ

যাদব পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর আরও ভেঙে পড়েছেন কুলভূষণের মা অবন্তী যাদব ও স্ত্রী চেতনকুল। কী এমন ঘটেছিল সেখানে?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৫:১৬
Share:

কুলভূষণের মুখোমুখি তাঁর মা ও স্ত্রী। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

ছেলের শিয়রে দাঁড়িয়ে মৃত্যু। পাকিস্তানের জেলে ফাঁসির অপেক্ষায় দিন গুনছেন কুলভূষণ যাদব। তবু ২৫ ডিসেম্বর দেখা করার অনুমতির খবরটা যে দিন পেয়েছিলেন, মায়ের বুকটা আশায়, আনন্দে ভরে উঠেছিল। তবে কি এর পর আরও বড় কোনও সুখবর আসতে পারে! কিন্তু ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তানে গিয়ে যে অভিজ্ঞতাটা হল, তা এক নিমেষে অপমানে আর যন্ত্রণায় কুঁকড়ে দিয়েছে তাঁকে।

Advertisement

যাদব পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর আরও ভেঙে পড়েছেন কুলভূষণের মা অবন্তী যাদব ও স্ত্রী চেতনকুল। কী এমন ঘটেছিল সেখানে?

পারিবারিক সূত্র বলছে, কুলভূষণ বার বার মা আর স্ত্রীকে বলছিলেন যে তিনি ভারতীয় গোয়েন্দাসংস্থা ‘র’ (RAW)-এর চর। তোতাপাখিকে শেখানো বুলির মতো আউড়ে যাচ্ছিলেন। যেন পিছন থেকে কেউ একটা বলাচ্ছে কথাগুলো। বা আগে থেকে শিখিয়ে রাখা। কুলভূষণ তাঁদের বলেছেন, ‘র’-এর হয়ে কাজ করতে গিয়েই পাকিস্তানে ঢুকেছেন তিনি। বালুচিস্তানে সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মেও জড়িত ছিলেন বলে মা আর স্ত্রীকে বলেছেন কুলভূষণ।

Advertisement

আরও পড়ুন
পাকিস্তানের তীব্র নিন্দায় সুষমা, ‘ধিক্কার’ উঠল গোটা সংসদ থেকে

এ সব শুনে হতভম্ব হয়ে যান অবন্তী ও চেতনকুল। ছেলের কাছে মা জানতে চান, “কেন এ সব কথা বলছ তুমি?” মরাঠিতে কথা বলতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। থামিয়ে দিয়েছেন পাক আধিকারিকেরা। আর মরাঠিতে করা প্রশ্নের জবাব দেননি কুলভূষণও। কথা বলেছেন ইংরেজি বা হিন্দিতে। বোঝাই যাচ্ছিল, আগে থেকেই এমন ফরমান জারি করা ছিল কুলভূষণের উপর। ভারতীয় অফিসারদের রিপোর্ট করতে গিয়ে অবন্তী ও চেতনকুল বলেছেন, কুলভূষণকে যেন একটা স্ক্রিপ্ট মুখস্ত করিয়ে রাখা হয়েছিল। এমনটাই মনে হয়েছে তাঁদের।

আরও পড়ুন
পাকিস্তানকে চার টুকরো করতে হবে, যুদ্ধ ঘোষণা করুক ভারত: সুব্রহ্মণ্যন

কুলভূষণের কথা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন মা অবন্তী ও স্ত্রী চেতনকুল। এপি-র তোলা ফাইল চিত্র।

কুলভূষণের সঙ্গে মিনিট চল্লিশের সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে, আরও খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়তে হয়েছিল তাঁর মা আর স্ত্রীকে। পাক বিদেশ মন্ত্রকের দফতরের বাইরে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। সেখানে পাক মিডিয়ার কাছেও এক দফা ‘হেনস্থা’র শিকার হন। কুলভূষণকে নিয়ে ধেয়ে আসে একের পর এক অস্বস্তিকর প্রশ্ন। ‘আপনার স্বামী হাজারো নিরপরাধ পাকিস্তানির রক্ত নিয়ে হোলি খেলেছেন, এ ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?’ বা ‘খুনি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে আপনার কেমন লাগছে?’ এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে কল্পনাতেও ভাবেননি ওঁরা।

এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন

এ ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও। বৃহস্পতিবার সংসদে তিনি বলেন, “বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই ধরনের আচরণের জন্য পাকিস্তানের কড়া নিন্দা করা উচিত।” সুষমার দাবি, পাকিস্তান কথা দিয়েছিল, কুলভূষণের মা আর স্ত্রীকে সংবাদমাধ্যমের সামনে আনা হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেনস্থা করতেই, পরিকল্পিত ভাবে সেটা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন