India-China Conflict

তিন এলাকা থেকে সেনা সরাল চিন, নজর রাখছে ভারত

পূর্ব লাদাখের তিনটি এলাকা— গালওয়ান, হট স্প্রিং এবং গোগরা থেকে বৃহস্পতিবার চিনা ফৌজের প্রখম দফার পিছনোর পর্ব শেষ হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ১৬:২১
Share:

পূর্ব লাদাখের ভূপ্রকৃতি— ছবি: পিটিআই

সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার শর্ত মেনে পূর্ব লাদাখের তিনটি এলাকায় বৃহস্পতিবার চিনা ফৌজের পিছু হটার প্রথম পর্ব সম্পন্ন হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর মিলেছে। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএএসি) অন্য কিছু অংশে টানাপড়েন চলছে এখনও। পিপলস লিবারেশন আর্মি প্রথম দফার সমঝোতার শর্ত মেনে পূর্ব লাদাখের তিনটি এলাকা থেকে সরলেও তাই পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারত।

Advertisement

লাদাখের চুসুল সীমান্ত লাগোয়া মল্ডোতে গত ৩০ জুন কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেনা সূত্রের খবর, সেই আলোচনার ফলশ্রুতি হিসেবে ২ জুলাই থেকে সেনা সমাবেশ কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর পরে ৫ জুলাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ইর বৈঠকে লাদাখে পর্যায়ক্রমে ডিসএনগেজমেন্ট এবং ডিএসক্যালেশনের বিষয়ে খুঁটিনাটি স্থির হয়।

গালওয়ান উপত্যকার ১৫ জুনের সংঘর্ষস্থল পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪ থেকে পিপলস লিবারেশন আর্মির পিছু হটার ‘প্রমাণ’ উপগ্রহ চিত্রে মিলেছে ইতিমধ্যেই। অদূরের পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ (হট স্প্রিং) এবং গোগরার পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৭এ থেকেও কিছুটা পিছনে সরেছে তারা। সেনার একটি সূত্রে খবর, ৩০ জুনের পরে ওই তিন এলাকা থেকে পাঁচটি ছাউনি সরিয়েছে চিনা ফৌজ। কিন্তু তাদের বেশ কিছু নির্মাণ ও ছাউনি এখনও রয়েছে। ফলে পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা। তবে আপাতত ওই তিন এলাকায় লালফৌজের সমাবেশ এলএসি-র ওপারে রয়েছে বলেই এদিন উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ফের সেনা অভ্যুত্থানের ছক? ৩ জেনারেল-সহ সেনার ৬০ অফিসার বরখাস্ত!

মে মাসে এলএসি পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে গালওয়ান নদীখাতের উপর পাথর ভেঙে রাস্তা বানিয়েছিল চিন। আর্থ মুভার এনে নদীর উপর বানানো হয় কালভার্ট। সেনার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দ্রুত সামরিক যানবাহন যাতায়াতের উদ্দেশ্যে ওই চিনা ফৌজ ও রাস্তায় অ্যাসফল্টের প্রলেপ দিয়েছে। ওদের আনা কিছু ছাউনিও রয়ে গিয়েছে। সেগুলি থেকে গেলে বুঝতে হবে, পিছু হটা নয় বরং শীতের সময় পাকাপাকি ভাবে ওখানে ঘাঁটি গেড়ে বসার মতলব রয়েছে ওদের।’’

আরও পড়ুন: ঝুলছে ৬০ মামলা, কানপুরে পুলিশহত্যার নায়ক বিকাশ হার মানাবে বলিউডের স্ক্রিপ্টকেও

প্যাংগং লেকের উত্তরের ফিঙ্গার এরিয়া-৮-এর তিনটি পয়েন্ট থেকে চিন সেনা কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ফিঙ্গার এরিয়া ৫ থেকে ৮ এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে বাঙ্কার, পিলবক্স, নজরদারি টাওয়ার বানিয়েছে তারা। অথচ মে মাসের আগে ওই এলাকাগুলিতে নিয়মিত টহল দিত ভারতীয় সেনা। দৌলত বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটির অদূরে দেপসাং এলাকায় ঢুকে আসা লালফৌজ ভারতীয় সেনার এলএসি বরাবর টহলদারিতে বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ।

এলএসি-তে উত্তেজনা কমানোর উদ্দেশ্যে চলতি সপ্তাহেই দু’দেশের ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম অন কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড কনসাল্টেশন’ বৈঠক হওয়ার কথা। পরবর্তী পর্যায়ে ফের হবে সামরিক স্তরের আলোচনা। সেখানে দ্বিতীয় পর্যায়ের ডিসএনগেজমেন্ট এবং ডিএসক্যালেশন নিয়ে আলোচনায় ভারতের তরফে বিষয়গুলি তোলা হতে পারে। তবে সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়া অনেকটাই সময়সাপেক্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন