National News

‘নিচু জাত’ নিয়ে ক্রমাগত অপমান, হেনস্থা! হাসপাতাল ক্যাম্পাসেই আত্মঘাতী মহিলা চিকিৎসক

পায়েলের স্বামী সলমনও পেশায় চিকিৎসক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পায়েলের ঊর্ধ্বতন তিন চিকিৎসক হেমা আহুজা, ভক্তি মেহতা এবং অঙ্কিতা খাণ্ডেলওয়ালের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ হাতে পেয়েছে পুলিশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ১৩:২৮
Share:

আত্মঘাতী চিকিৎসক পায়েল তাদভি। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বইয়ের বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরাই ভয়ঙ্কর রোগের শিকার। তবে শারীরিক নয়, জাতিবিদ্বেষের মানসিক রোগাক্রান্ত। আর তাঁদের সেই ‘রোগ’-এর মাশুল প্রাণ দিয়ে দিতে হল এক মহিলা রেসিডেন্ট ডক্টরকে। গত ২২ মে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের মধ্যেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন পায়েল তাদভি নামে বছর ছাব্বিশের ওই চিকিৎসক। আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়।

Advertisement

মৃতার পরিবারের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। সাসপেন্ড করা হয়েছে তিন জনকেই। যদিও পরিবারের অভিযোগ, আগেও বহুবার অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু তখন কেউ তাঁদের অভিযোগ শোনেননি। আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে মেয়ের এই পরিণতি হত না, বলেছেন পায়েলের মা আবেদা তাদভি। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলার বাসিন্দা পায়েল ২০১৮ সালের মে মাসে স্ত্রী রোগ বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। ডিসেম্বরেই পরিবারের লোকজনকে জানান, নিচু জাত বলে তাঁকে তাঁরই ঊর্ধ্বতন চিকিৎসকরা হেনস্থা করছেন। সামান্য কারণেও জাত তুলে তাঁকে নানা ভাবে অপদস্থ করেন। পায়েলের মায়ের অভিযোগ, ‘‘ওই ঘটনার পরই চিকিৎসকদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম এবং সমস্যা মেটানোর জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমার কথায় কান দেননি। কলেজের ডিনের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও করি। কিন্তু সাক্ষাতের অনুমতি পাইনি।’’ তিনি বলেন, ২২ মে ঘটনার দিন বিকেল চারটের সময়ও মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ও আমাকে জানিয়েছিল, মানসিক ভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। তার পরই মৃত্যুর খবর আসে।’’

Advertisement

পায়েলের স্বামী সলমনও পেশায় চিকিৎসক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পায়েলের ঊর্ধ্বতন তিন চিকিৎসক হেমা আহুজা, ভক্তি মেহতা এবং অঙ্কিতা খাণ্ডেলওয়ালের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে আগরিপাড়া থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যদিও কাউকেই এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তিন জনের বিরুদ্ধে র‌্যাগিং, অত্যাচার ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটিও আলাদা ভাবে তদন্ত শুরু করেছে।

আরও পড়ুন: যোগাযোগ করেননি তদন্তকারীদের সঙ্গে, এবারও সিবিআই হাজিরা এড়ালেন রাজীব কুমার

আরও পডু়ন: নিজের রাজ্যে বক্তৃতাতেও মোদীর মুখে বাংলা, শোনালেন রিনা সাহার কথা

বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষও। কলেজের ডিন রমেশ ভারমল বলেন, স্ত্রী রোগ বিভাগের প্রধান এস ডি শিরোদকর, এবং পায়েলের ইউনিট হেড ই চিং লিং-কে শো কজ করা হয়েছে। কেন বার বার অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তার সদুত্তর দিতে বলা হয়েছে দু’জনকে। অন্য দিকে ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে আদিবাসী সমাজও। দোষীদের শাস্তির দাবিতে আগামিকাল মঙ্গলবার তাঁরা প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন