Advertisement
১১ মে ২০২৪

নিজের রাজ্যে বক্তৃতাতেও মোদীর মুখে বাংলা, শোনালেন রিনা সাহার কথা

সুরাতের অগ্নিকাণ্ডের শোকে বিধ্বস্ত গুজরাতে খুব একটা উচ্চগ্রামে জয়োল্লাস করতে চাননি বিজেপির দুই মস্তিষ্ক। কিন্তু বক্তৃতায় দু’জনেই টেনেছেন পশ্চিমবঙ্গের কথা।

নরেন্দ্র মোদী (ইনসেটে রিনা সাহা)।

নরেন্দ্র মোদী (ইনসেটে রিনা সাহা)।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

সভা নিজেদের রাজ্যে। কিন্তু তাঁদের নজর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে। আমদাবাদের মঞ্চ থেকে খোলাখুলিই আজ তা জানিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ।

সুরাতের অগ্নিকাণ্ডের শোকে বিধ্বস্ত গুজরাতে খুব একটা উচ্চগ্রামে জয়োল্লাস করতে চাননি বিজেপির দুই মস্তিষ্ক। কিন্তু বক্তৃতায় দু’জনেই টেনেছেন পশ্চিমবঙ্গের কথা। অমিত প্রথমে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘এত জোরে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলুন, যাতে বাংলা পর্যন্ত আওয়াজ পৌঁছয়।’’ পরে মাতৃভাষায় মোদীও নিজের বক্তৃতা শেষ করেছেন ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান তুলিয়ে। এবং জনতাকে বলেছেন, ‘‘যে ভাবে সভাপতি বললেন, সে ভাবে বলুন। যাতে বাংলায় আওয়াজ পৌঁছয়।’’

আসন তো বেড়েছেই, উত্তরপ্রদেশের পরে সারা দেশে বিজেপি সব চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গেই। এই পরিস্থিতিতে মোদী আজ তুলেছেন রায়গঞ্জের রিনা সাহার কথা। এই গৃহবধূর হিন্দি টিভি সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল। যেখানে অননুকরণীয় ভঙ্গিতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘২২ দিন গুজরাত ঘুরকে আয়া হ্যায়। গুজরাত মে বিকাশ হুয়া হ্যায় মানে স্বর্গ হুয়া হ্যায়! মোদী সরকারনেই তো করতা হ্যায়। কাজেই মোদী সরকারকে হাম সাপোর্ট করতা হ্যায়।’’ রিনাদেবী এ-ও বলেছিলেন, বাংলায় গুজরাতের মতো ‘স্বর্গ’ তৈরি হতে একশো বছর লাগবে। কারণ এই রাজ্যে সরকারের টাকা নেতারা ‘খেয়ে নেন’। আজ মোদী বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার এক বয়স্কা বোনের সাক্ষাৎকার দেখেছি। ‘মোদী মোদী’ করে বাংলায় কথা বলছিলেন। বললেন, ‘আমি গুজরাতে গিয়েছি। দেখেছি স্বর্গ হয়েছে, স্বর্গ!’ ভোট কাকে দেবেন জানতে চাওয়া হলে বললেন কমিউনিস্ট পার্টিকে।’’

আরও পড়ুন: ফলেই প্রমাণ ভুল বলিনি: রিনা

বঙ্গের বধূকে অনেকেই বলছেন, ‘গুজরাত মডেলের নতুন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’। কারণ আজই উন্নয়নের সেই গুজরাত মডেলের কথা বহু দিন পরে শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘২০১৪ সালে গুজরাতকে জানার সুযোগ পেয়েছিল দেশ। সামনে এসেছিল গুজরাতের বিকাশের মডেল। দেশের ইতিহাসে ১৯৪২-’৪৭ সালের মতোই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে আগামী পাঁচটা বছর। লক্ষ্য হবে সার্বিক উন্নয়ন। বিশ্বের দরবারে পুরনো আসন ফিরিয়ে দিতে হবে ভারতকে।’’ মোদীর বক্তব্য, ষষ্ঠ দফা ভোটের পরে তিনি যখন তিনশো আসন পেরোনোর কথা বলেছিলেন, তখন হেসেছিলেন অনেকে। কিন্তু মানুষ শক্তিশালী সরকারই চেয়েছে। সারা বিশ্বের সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

অমিত শাহ আজ বলেন, ‘‘নরেন্দ্রভাইয়ের সময়ে বিজেপি শুধু যে প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেড়েছে তা-ই নয়, ভোটও বেড়েছে।’’ বস্তুত, রিনাদেবীর পরিবারও আজ জানিয়েছে, ভোটের ফল দেখে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন তাঁরা। রায়গঞ্জে জিতেছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে দিলীপ ঘোষেরা বলছেন, ‘উনিশে হাফ, একুশে সাফ’ নীতি নিয়ে এগোচ্ছেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির সংস্কৃতি মেলেই না। কিছু মানুষ ধর্মের সুড়সুড়ির জন্য বা দেশের সুরক্ষা নিয়ে বিজেপির কথায় বিভ্রান্ত হয়ে ভোট দিয়েছেন। নিশ্চিত ভাবেই তাঁরা বুঝবেন যে, উত্তর ভারতের সংস্কৃতি এখানে এনে ফেললে বাঙালির বাঙালিয়ানা আর থাকবে না।’’

সভার পরে মোদী যান আমদাবাদের খানপুরে বিজেপির দফতরে। নিচুতলার কর্মকর্তা হিসেবে সেখান থেকেই তাঁর উত্থান। এর পরে গাঁধীনগরের বাড়িতে। মা হীরাবেনের আশীর্বাদ নেন মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE