ফাইল চিত্র।
লালুপ্রসাদের ‘অনিয়ন্ত্রিত জিভ’ই তাঁর অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণে প্রধান প্রতিবন্ধক বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। পশুখাদ্য মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আরজেডি সভাপতি বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন রাঁচীর রাজেন্দ্র ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিমস)-এ। সেখানে তাঁর দেখভালের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের বক্তব্য, ‘‘লালুপ্রসাদের অসতর্ক খাদ্যাভ্যাস আমাদের সমস্যায় ফেলছে। বাইরে থেকে খাবার আসছে। ফলে হাসপাতালের খাবার তিনি খাচ্ছেন না। যার জেরে তাঁর উপরে ওষুধের প্রভাব কম হচ্ছে। সুগার একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত।’’
রিমসে লালুপ্রসাদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসক উমেশ প্রসাদ। তিনি জানান, সুগার ও প্রেশার সমেত লালুর মোট ১১ রকমের অসুস্থতা রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর অর্শ অপারেশন হয়েছে। রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় ক্ষত সারতে সময় লাগবে বলে মনে করছেন তাঁরা। রিমসের ভারপ্রাপ্ত পুষ্টিবিদ মাধুরী কুমারী জানান, লালুপ্রসাদ ঠিক কী খাচ্ছেন তিনি জানেন না। কারণ তাঁকে পেয়িং ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে হাসপাতালের খাবার যাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘তাঁকে যে সমস্ত খাবার খেতে নিষেধ করেছি, তিনি সেই খাবারই খাচ্ছেন!’’
তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, আরজেডি প্রধান কখনওই স্বাস্থ্য সচেতন নন। মুখে যা ভাল লাগে, তাই খান। নব্বইয়ের দশকে এক সাংবাদিক লালুপ্রসাদের কাছে জানতে চান, ‘‘আপনার জনপ্রিয়তার রহস্য কী?’’ সদাহাস্যময় লালু আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলেন, ‘‘আমার জিভ। এর উপরে কখনওই আমার নিয়ন্ত্রণ ছিল না।’’ জ্যোতিষের পরামর্শে গত ডিসেম্বরে ঘোষণা করেন, আর আমিষ ছোঁবেন না। মাসখানেক পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে গল্পগুজবের সময়ে তাঁর নিরামিষ খাবারের প্রসঙ্গ উঠলে দার্শনিক ভাবে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মাছ-মাংস ছাড়ব কেন? নিরামিষ খেলে কী অমর হব?’’
বাচনভঙ্গি থেকে রসনাপূর্তি, এই দু’টি ব্যাপারে নিজেকে কখনওই নিয়ন্ত্রণ করেননি লালু। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই তাঁর ইউএসপি। আর এখন তা নিয়েই সমস্যায় চিকিৎসক ও যাদব পরিবার।