হোটেলের সামনে গাড়ির সারি। দ্রাসে। নিজস্ব চিত্র
এগোনোর উপায় নেই। পিছোনোরও। সামনে-পিছনে সার দিয়ে গাড়ি। ঘণ্টার পরে ঘণ্টা কাটছে গাড়িতে বসে। খাবার, জল, শৌচাগার— কিছু নেই। কখন গন্তব্যে পৌঁছনো যাবে, জানা নেই তা-ও। কাশ্মীর বেড়াতে গিয়ে ধসের জেরে এ ভাবে আটকে পড়েছেন দুর্গাপুরের জনা কুড়ি পর্যটক।
দুর্গাপুরের ছ’টি পরিবারের সদস্য ওই পর্যটকেরা রওনা হন ২১ মে। দলে রয়েছেন ৮ থেকে ৬২ বছর, নানা বয়সের লোকজন। লেহ্-লাদাখ ঘুরে কার্গিল-দ্রাস হয়ে শ্রীনগর পৌঁছে আজ, শুক্রবার বাড়ি ফেরার জন্য বিমান ধরার কথা তাঁদের। কিন্তু বাদ সেধেছে ধস।
বেনাচিতির নির্মল চৌধুরী, বিদ্যাসাগরপল্লির মলয় সাহা-রা বৃহস্পতিবার ফোনে জানান, বুধবার লেহ্ থেকে কার্গিলের উদ্দেশে বেরোনোর পর থেকে ভোগান্তির শুরু। রাস্তায় যানজটে আটকে পড়তে হয়। বিভিন্ন গাড়ির যাত্রীদের কাছে জানতে পারেন, দ্রাস ও সোনমার্গের মাঝে ধসের জেরে এই পরিস্থিতি। কার্গিল পৌঁছন গভীর রাতে।
বৃহস্পতিবার সকালে শ্রীনগরের দিকে যাত্রা শুরু করে কয়েক কিলোমিটার যেতেই ফের গাড়ির লাইনে আটকে পড়া শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রাস্তা পেরোন তাঁরা। নির্মলবাবুর আক্ষেপ, ‘‘খাবার, জল শেষ। বয়স্কেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শৌচাগার না পেয়ে মহিলারাও পড়ছেন সমস্যায়। স্থানীয় প্রশাসনেরও সহযোগিতা পাচ্ছি না। শ্রীনগর পৌঁছে বিমান ধরতে পারব কি না, জানি না!’’
পর্যটকদের আটকে থাকার খবর পেয়ে এ দিন তৎপর হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। বিকেলে নির্মলবাবুরা জানান, হঠাৎ পুলিশ এসে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বার্তা এসেছে। তাঁদের গাড়িগুলি যতটা সম্ভব এগিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। যদিও রাত পর্যন্ত জোজিলা পাস থেকে বেশ কিছুটা দূরে দ্রাসেই আটকে রয়েছেন বলে জানান তাঁরা।
দুর্গাপুরে চিন্তায় রয়েছেন পর্যটকদের পরিজনেরাও। মলয়বাবুর ভাইপো দীপাঞ্জন বলেন, ‘‘ওরা ভালয়-ভালয় ফিরে এলে বাঁচি!’’ মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘পর্যটকদের নিরাপদে বাড়ি ফেরাতে সব রকম উদ্যোগ হচ্ছে।’’