ফাইল চিত্র।
পাঁচ জন বাঙালির মতো বেড়ানো তাঁদেরও নেশা। গত ২২ তারিখ হুগলির কোন্নগর থেকে ভূস্বর্গের উদ্দেশে বেরিয়েছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছেলে শ্রীকুমার, ভাইপো সৌম্য, মামাতো ভাই অরুণ ভট্টাচার্য, ওর স্ত্রী লিসা এবং ওদের সাত বছরের মেয়ে মেঘনা। কিন্তু আনন্দের সেই সফর যে এ ভাবে আতঙ্কে বদলে যাবে, পড়তে হবে ধসের মুখে, সেটা তাঁরা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।
সপ্তাহখানেক ধরে কাশ্মীরকে তাঁরা উপভোগ করছিলেন। তাপমাত্রার পারদ প্রায় শূন্যে। এ ক’দিনে প্রায় রোজই তুষারপাত দেখতে হয়েছে। বললেন অভিজিৎ। মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ লেহ্ থেকে গাড়িভাড়া করে তাঁরা শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে।
বেলা আড়াইটে নাগাদ সোনমার্গের কিছুটা আগে গাড়ি থমকে যায়। জায়গাটা দ্রাস সেক্টরে। অভিজিতের কথায়, “তখনও বুঝিনি ভূস্বর্গের রাজপথে কতটা দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে। অনেকক্ষণ গাড়ির চাকা না গড়ানোয় অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলাম। শুনলাম, রাস্তায় ধস নেমেছে। তুষারের সঙ্গে বড় চাই ভেঙে পড়ছে।”
পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় বুধবার সকালে। রাস্তায় তখন পর পর গাড়ি দাঁড়িয়ে। কত পর্যটক যে আটকে পড়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই।
এ দিকে যে হোটেলের ভাড়া ৩০০ টাকা, তার ভাড়া ২০০০ টাকা চাইছেন মালিকরা! খাবারের দাম দুই থেকে তিন গুণ।পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছেন যে যাঁর মতো। অভিজিত জানালেন, “এক লিটারের জলের বোতল ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। একটা রুটির দাম ২০ টাকা।” প্রত্যেকেই ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায়।
আরও পড়ুন: দ্রাসে ভয়াবহ ভূমিধস, আটকে বাঙালি পর্যটকরা
আরও পড়ুন: বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে ফের নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ, সেই উত্তরপ্রদেশেই
এই পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে মেলেনি বলে অভিযোগ। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ব্যাঙ্ক ধর্মঘট। গ্যাঁটের কড়ি অনেকেরই প্রায় শেষ, অথচ এটিএম থেকে টাকা তোলার জো নেই।
বেলঘরিয়ার বাসিন্দা প্রবাল সাহার অবস্থাও অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই । অনন্দের সফরে আনন্দ নেই বিন্দুমাত্র। এখন ওঁরা বা়ড়ি ফিরতে পারলেই বাঁচেন।