National News

জুয়েলদের যাবজ্জীবনে ভাঙছে শান্তিচুক্তি, আশঙ্কা ডিমা হাসাওতে

শান্তি আলোচনায় থাকা জঙ্গি সংগঠনের দুই মাথাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ দেওয়ায় ভাঙতে চলেছে ডিএইচডি (জুয়েল) ও রাজ্য-কেন্দ্র সরকারের ত্রিপাক্ষিক শান্তিচুক্তি। তাই ডিমা হাসাও জেলা ফের অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ২১:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

শান্তি আলোচনায় থাকা জঙ্গি সংগঠনের দুই মাথাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ দেওয়ায় ভাঙতে চলেছে ডিএইচডি (জুয়েল) ও রাজ্য-কেন্দ্র সরকারের ত্রিপাক্ষিক শান্তিচুক্তি। তাই ডিমা হাসাও জেলা ফের অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

২০০৯ সালে উত্তর কাছাড় স্বশাসিত পরিষদের টাকা জুয়েলদের হাতে চলে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে এনআইএ তদন্ত শুরু হয়। ২০০৯ সালের অক্টোবরে ৩৬০ জন জঙ্গি-সহ জুয়েল গার্লোসা, নিরঞ্জন হোজাইরা অস্ত্র জমা দিয়ে শান্তি আলোচনায় আসে। পরে তারা বিজেপিতে যোগ দেয়। ২০১২ সালে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয় ডিএইচডি-কেন্দ্র-রাজ্যের। ভেঙে দেওয়া হয় জঙ্গি সংগঠন। নিরঞ্জন স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যবাহী সদস্যও হন। নিরঞ্জন-জুয়েলরা এখনও স্বশাসিত পরিষদের বিজেপি নেতা।

কিন্তু ২৩ মে এনআইএর মামলায় বিশেষ আদালত নিরঞ্জন, জুয়েল ও প্রাক্তন সিইএম মোহিত হোজাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। সাজা ঘোষণার পরেই জুয়েল জানান, তাঁরা শান্তি চুক্তি প্রত্যাহার করছেন। নিরঞ্জনও জানান, ডিমা হাসাওয়ের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাবে।

Advertisement

জুয়েলপন্থীরা গত কাল আন্দোলনে নামেন হাফলঙে। জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাদের দাবি, শান্তি আলোচনায় আসার সময় বলা হয়েছিল জুয়েলদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু তারপরেও নেতাদের জেলে পাঠিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। নিরঞ্জন-জুয়েলদের আইনজীবীদের দাবি, বিএলটি জঙ্গিদের ক্ষেত্রে একইভাবে শান্তিচুক্তির পরে সব ধরণের মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। তাদের স্বশাসিত পরিষদও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডিমাসাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন নীতি নিল কেন্দ্র। দুই নেতাকে কারাবাস থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রকেই কোনও উপায় বের করতে হবে। শান্তি চুক্তির পরেও জঙ্গি নেতাদের যাবজ্জীবন সাজা হলে অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি আর কখনও সরকারের কথা ভরসা রেখে শান্তির পথে আসবে না।

আরও পড়ুন: ডিব্রুগড়ে পাইপলাইনে বিস্ফোরণ, আলফার দাবি ওড়ালো পুলিশ

অবশ্য পুলিশের দাবি, নাশকতার ঘটনা নয়, টাকা তছরূপের এনআইএ মামলার জুয়েলরা যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছে। তার সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্পর্ক নেই। ওই মামলায় যারা জড়িত শুধু তারাই সাজা পেয়েছেন। গোটা জুয়েল গোষ্ঠীকে তার সঙ্গে জড়ানো ঠিক নয়। এক সময়ের নৃশংস, দুঁদে জঙ্গি নিরঞ্জন-জুয়েলদের অনেক কষ্টে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের কড়া সাজা হওয়ায় তাই পুলিশ খুশি। ডিএইচডি শান্তির পথে আসার পরে জেলায় শান্তি ফেরে। শেষ হয় ব্রডগেজ লাইনের কাজ। হয়েছে সড়ক সম্প্রসারণ। কিন্তু পুলিশের বিশেষ শাখার বক্তব্য, জুয়েলদের নিজেদের মধ্যে রেষারেষি চলছিল। জেলাকে অশান্ত করার ছকও কষছিল জুয়েল। ডিমাসা সংগঠন জাডিকে নাইসো হোসোম আজ আদালতকে রায় পূনর্বিবেচনার দাবি জানায়। হুমকি দেয়, জুয়েলরা ছাড়া না পেলে ডিমা হাসাওতে ফের জঙ্গি আন্দোলন হবে। ডিমা হাসাওয়ের এসপি বিবেক রাজ সিংহ জানান, জেলা জুড়ে নিরাপত্তা কড়া করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন