যত দিন রেল মন্ত্রকে ছিলেন, ট্রেন না-বাড়িয়ে পরিকাঠামো বৃদ্ধিতেই জোর দিয়েছিলেন সুরেশ প্রভু। এ বার সেই পথেই হাঁটতে চলেছেন তাঁর উত্তরসূরি পীযূষ গয়ালও।
নতুন ট্রেন নয়, পরিকাঠামো মজবুত করাই গয়ালের লক্ষ্য। রেল সূত্রের খবর, আগাম জমি না-পেলে, অন্তত জমির প্রতিশ্রুতি না-পেলে কোথাও আর কোনও নতুন প্রকল্প ঘোষণা করবে না রেল। প্রকল্প পেতে গেলে জমির লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোকে।
কয়েক বছর ধরে পরের পর দুর্ঘটনা, সময়ে ট্রেন চালাতে না-পারার সমস্যা এবং যাত্রী পরিষেবার খামতি নিয়ে রেল কার্যত জেরবার। এই পরিস্থিতিতে ট্রেন না-বাড়িয়ে সময়সূচি মেনে কী ভাবে ট্রেন চালানো যায়, আপাতত সেটাই মূল লক্ষ্য রেলের। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে মূলত পরিকাঠামো ঢেলে সাজার পরিকল্পনাই চলছে পুরোদমে।
প্রশ্ন উঠছে, গত বাজেটে ঘোষিত পরিকাঠামো উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের কতটা অগ্রগতি হয়েছে?
রেলকর্তারা বলছেন, গত বাজেটে রেলের জন্য ৫৫০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছিল। তার মধ্যে নতুন লাইন পাতার কাজে বরাদ্দ ছিল ২১২ কোটি। রেলের খবর, তিন হাজার ৬০০ কিলোমিটার লাইন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম আট মাসে নতুন লাইন পাতা হয়েছে দু’হাজার কিলোমিটার। এক হাজার ৬০০ কিলোমিটার বাকি।
গত বছর পুজোর আগে উত্তরপ্রদেশে পরপর চারটি রেল দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে উঠে এসেছিল রেললাইনে ফাটলের কথা। তার পরেই রেল মন্ত্রক নতুন লাইন পাতার কাজ বন্ধ রেখে তড়িঘড়ি পুরনো লাইন বদলাতে শুরু করে। এখন সব জোনেই রেললাইন বদলানোর কাজ চলছে। তাতে নতুন লাইন পাতার কাজ মার খেয়েছে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা।
একই ভাবে বিদ্যুদয়নের কাজ বাকি ৫০ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭ হাজার ৩৬৮ কিলোমিটার। এখনও পর্যন্ত বিদ্যুদয়ন হয়েছে ৩৭ হাজার ৮৪৪ কিলোমিটার লাইনে। তবে বেশির ভাগ ওভারব্রিজ এবং আন্ডারপাসের নির্মাণকাজ শেষ করা গিয়েছে বলে রেলকর্তাদের দাবি।
রেল বোর্ডের কর্তাদের আশা, পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ যেটুকু করা গিয়েছে, তাতে আগামী বছর কিছুটা হলেও পরিষেবা উন্নত করা যাবে। মিটবে দেরিতে ট্রেন চলার সমস্যাও। দিনের পর দিন ট্রেনের অন্বাভাবিক দেরির জেরে যাত্রীদের যে-ভাবে ভূগতে হচ্ছে, এই আশার বাণী তাতে কতটা প্রলেপ দিতে পারবে— সেটা বলবে সময়ই।