প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
এ বার পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হলে সন্ত্রাসবাদ নিয়েই কথা হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হলে এ বার পাক-অধিকৃত কাশ্মীর নিয়েই কথা হবে। আজ বুদ্ধপূর্ণিমা, শান্তির পথও যুদ্ধ দিয়ে হয়।
আর সন্ত্রাসবাদীদের চোখরাঙানি সহ্য করবে না ভারত। পাকিস্তানকে যদি বাঁচতে হয় ওদের সন্ত্রাসের পরিকাঠামো নির্মূল করতে হবে। ‘টেরর’ ও ‘টক’ (সন্ত্রাস এবং আলোচনা) একসঙ্গে চলতে পারে না। জল এবং রক্ত একই সঙ্গে বইতে পারে না।
‘স্টেট স্পনসর্ড টেররিজ়ম’-এর বড় উদাহরণ পহেলগাঁও কাণ্ড। প্রত্যেকটি যুদ্ধের ময়দানে আমরা পাকিস্তানকে পর্যদুস্ত করেছি। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এও আমরা সেই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছি। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ হাতিয়ার তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে।
আমাদের সেনাবাহিনী সর্বদা সতর্ক। আকাশ, জল থেকে মাটি— সর্বত্র আমরা প্রস্তুত থেকেছি। ‘নতুন নর্মাল’ তৈরি করেছে সেনা। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আবার জবাব দেওয়া হবে। কোনও ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ ভারত সহ্য করবে না।
আমাদের স্কুল-কলেজ, সাধারণ নাগরিকের বাড়িঘর, মন্দিরকে নিশানা করল পাকিস্তান। এখানেও ওরা ব্যর্থ হল। দুনিয়া দেখল কী ভাবে পাকিস্তানের ড্রোন, মিশাইল ভারতের কাছে ধুলিসাৎ হল। আকাশেই নষ্ট করে দেওয়া হল। তিন দিনে পাকিস্তানকে যা করা হয়েছে, যা ওরা ভাবতেই পারেনি। এখন ওরা বাঁচার রাস্তা খুঁজছে। দেশে দেশে ঘুরছে। খারাপ ভাবে হেরে যাওয়ার পরে ১০ মে পাকিস্তানি সেনা আমাদের ডিজিএমও-র দ্বারস্থ হন। তার আগে আমরা পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছি।
পৃথিবীতে বড় বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা একই সুতোয় বাধা। তাই ভারতের হামলায় সন্ত্রাসবাদের ‘হেড কোয়ার্টার’ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান হতাশ। ওরা নিরাশায়। এই অবস্থায় ওরা আরও একটা ভুল করেছে। ভারতের সঙ্গ দেওয়ার বদলে ভারতের উপরেই হামলা করল!
যখন দেশ একজোট হয়, যখন সবার আগে দেশ আসে, তার ফল মেলে। যখন পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদকে গুঁড়িয়ে দিতে ভারত হামলা চালাল, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনই নয়, তাদের মনোবলও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
অপারেশন সিঁদুরের প্রাপ্তির জন্য, তাঁদের (সেনার) পরাক্রমকে আমরা উৎসর্গ করছি দেশের সব মা, সকল মহিলাদের। স্ত্রী, বাচ্চার সামনে ধর্ম জিজ্ঞাসা করেছে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে পহেলগাঁওয়ে। আমার কাছে এটা ক্রূরতা। এই ঘটনার পরে সকলেই এক সুরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সুর তুলেছেন। জঙ্গিরা বুঝে গেছে মা-বোনদের সিঁদুর মোছার পরিণাম কী।
ভারতের পরাক্রমী সেনা, সশস্ত্র বাহিনী, এজেন্সি এবং আমাদের বিজ্ঞানীকে স্যালুট করছি।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশকেই চাপ দিয়েছিলেন সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য। অন্যথায় আন্তর্জাতিক ব্যবসার উপর প্রভাব পড়বে বলেও দুই দেশকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। সেই কথা আরও এক বার ‘মনে করালেন’ ট্রাম্প। ঘটনাচক্রে তাঁর মন্তব্যের কিছু ক্ষণ পরে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ রাখছেন।
শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম ঘোষণা করেন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির। তার পরে ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ভারত এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স (ডিজিএমও)-এর মধ্যে কথা হয়েছে। তাঁরা সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু তার পরেও সীমান্তে গোলাগুলি করেছে পাকিস্তান। এই প্রেক্ষিতে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর মোদীর ভাষণের আগে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে বক্তব্য রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সীমান্তে সংঘর্ষবিরতির মধ্যেও পাকিস্তান সেনার ধারাবাহিক হামলার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ কোনও ঘোষণা করতে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার প্রেক্ষিতে গত ৭ মে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তার পরে দুই দেশের মধ্যে উদ্ভূত উত্তেজনার পরিস্থিতির মধ্যে প্রথম বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ রাখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।