অখিলেশ যাদব
এক দিকে যাদব, অন্য দিকে মুসলিম জনসংখ্যার আধিক্য। ২০১৪-য় প্রবল গেরুয়া ঝড়েও এই আসনে ৬৩ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিংহ যাদব। এ বার সেই আজমগড়ে ‘বৃদ্ধ’ মুলায়মকে সরিয়ে এসপি-র প্রার্থী হচ্ছেন পুত্র অখিলেশ। মুলায়ম দাঁড়াচ্ছেন শুধু মইনপুরী থেকে।
শুধু আসন ‘কেড়ে নেওয়া’-ই নয়, তারকা প্রচারকদের যে তালিকা অখিলেশের দল দুপুরে প্রকাশ করেছিল, তাতে ৪০ জনের নাম থাকলেও মুলায়ম ছিলেন না। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হওয়ার পরে রাতে মুলায়মকে রেখে তারকা বক্তাদের দ্বিতীয় একটি তালিকা প্রকাশ করতে হল এসপি-কে। দলের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়, মোটেই আসন কেড়ে নেওয়া হয়নি, মইনপুরী ‘নেতাজি’র পক্ষে আরও নিরাপদ বলেই সেখানে দাঁড় করানো হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, আজমগড় যদি নিরাপদ না-হয়, অখিলেশ কী ভাবে দাঁড়াচ্ছেন সেখানে? তথ্য বলছে, বাস্তবে আজমগড়ও খুবই নিরাপদ এসপি-র কাছে। গত বার আলাদা আলাদা লড়ে এসপি ও বিএসপি যত ভোট পেয়েছিল, তা যোগ করলে দাঁড়ায় ৬৩ শতাংশ। এ বার তো বুয়া (মায়াবতী)-র দল বিএসপির সঙ্গে বাবুয়া (অখিলেশ)-র এসপি জোট বেঁধে লড়াইয়ে নেমেছে। অঙ্কের হিসেব কষেই বাবার আজমগড়কে গড় হিসেবে বেছেছেন বাবুয়া।
তিন বারের সাংসদ অখিলেশ শেষ বার ২০০৯-এ সাংসদ হয়েছিলেন কনৌজ থেকে। ২০১২-য় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সেই আসন তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন স্ত্রী ডিম্পল যাদবকে। ২০১৪-য়ও কনৌজ থেকেই সংসদে যাওয়া ডিম্পল এ বারেও সেই আসনেই লড়বেন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু মুলায়মকে নিয়ে কেন এত টানাপড়েন? আসলে বুয়ার সঙ্গে জোট বেঁধে বাবুয়া উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে এ বার কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলে দিলেও মাঝে মাঝেই উল্টো গেয়ে তাঁকে বিপাকে ফেলে দেন নেতাজি। তিনি বৃদ্ধ হয়েছেন। স্মৃতিভ্রংশেরও রোগী। উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া হটাতে অখিলেশ যখন কৌশলী লড়াই লড়ছেন, বেলাগাম কথা বলে খেলা কেঁচিয়ে দিতে পারেন মুলায়ম, এমন আশঙ্কা থেকেই যায়। যেমন সংসদ অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদে বাবা মুখ পুড়িয়েছে বাবুয়ার। অখিলেশ যখন নরেন্দ্র মোদীর ফিরে আসা আটকাতে মরিয়া, মুলায়ম সেই নরেন্দ্রভাইকেই শুভেচ্ছা জানিয়ে বলে বসলেন— ‘জিতে আবার আপনি ফিরে আসুন, এই কামনা করি!’
সেই জন্যই কি তারকা বক্তার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল মুলায়মকে? কিন্তু উত্তরপ্রদেশে মুলায়ম যে এখনও কতটা প্রভাবশালী, বক্তার তালিকায় তাঁকে ফিরিয়ে আনাতেই সেটা প্রমাণ হল।