National News

জল্পনায় ছিল মোদীর নাম, সেই কেন্দ্রে ২৮ বছরের তরুণ! ঘোর কাটছে না প্রার্থীর

বিরোধী শিবিরেও এই কেন্দ্রে লড়েছেন বি কে হরিপ্রসাদের মতো কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী। ১৯৯৯ সালে হারের পর থেকে অবশ্য তিনি আর ওই কেন্দ্র থেকে লড়েননি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ১৫:২৭
Share:

বেঙ্গালুরু দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। ছবি: তেজস্বী সূর্য়র টুইটার হ্যান্ডল থেকে নেওয়া

এ যেন ভাবনারও অতীত। লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় নিজের নাম দেখে যেন নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তেজস্বী সুর্য। গভীর রাতে বেঙ্গালুরু দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে বছর আটাশের এই তরুণ তুর্কির নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই যেন ঘোরের মধ্যে রয়েছেন। তার ছাপ পড়েছে টুইটারে। উৎসাহ, উত্তেজনা, আবেগ, কৃতজ্ঞতা— সব মিলেমিশে আছড়ে পড়েছে টুইটারের দেওয়ালে।

Advertisement

হবে না-ই বা কেন? বিজেপির অন্দরমহলে একটা সময় প্রধানমন্ত্রীর নাম আলোচনায় উঠে এসেছিল এই কেন্দ্রের জন্য। জল্পনা ছিল, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর সঙ্গে দ্বিতীয় কেন্দ্র হিসেবে এই বেঙ্গালুরু দক্ষিণেও প্রার্থী হতে পারেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। ১৯৯৯ সাল থেকে এই আসনে জিতে আসছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার। গত বছরের নভেম্বরে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই জল্পনা চলছিল অনন্ত কুমারের ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রার্থী হবেন তাঁর স্ত্রী তেজস্বিনী অনন্ত কুমার। কর্নাটকের বিজেপি সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাও তাঁর নামই পাঠিয়েছিলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে।

আবার বিরোধী শিবিরেও এই কেন্দ্রে লড়েছেন বি কে হরিপ্রসাদের মতো কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী। ১৯৯৯ সালে হারের পর থেকে অবশ্য তিনি আর ওই কেন্দ্র থেকে দাঁড়াননি। কে এই বি কে হরিপ্রসাদ? বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁর আরও একটি পরিচয়, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। যদিও হরিবংশ নারায়ণ সিংহের কাছে হেরে যান।

Advertisement

আরও পড়ুন: আডবাণী এখনও নীরবই, টিকিট না পাওয়ার ক্ষোভ কিন্তু গোপন রাখলেন না জোশী

আরও পডু়ন: কেমন কাজ করল মোদী সরকার? সমীক্ষা বলল, প্রায় সব ক্ষেত্রেই মাঝারিরও নীচে নম্বর দিচ্ছে মানুষ

এতেই স্পষ্ট, এই আসন সব দলের কাছেই কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কতটা ওজনদার। এ হেন হেভিওয়েট আসনে কি না প্রার্থী ২৮ বছরের আনকোরা তেজস্বী সূর্য? হতে পারেন তিনি সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ। পারিবারিক সূত্রে থাকতে পারে তাঁর দীর্ঘ বিজেপি ঘরানা। আইনজীবী পেশার পাশাপাশি নিজে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু তা বলে সরাসরি প্রথমবারই লোকসভার প্রার্থী! তাও আবার বেঙ্গালুরু দক্ষিণের মতো আসনে!

বিশ্বাস করা শক্তই বটে। প্রথমে তেজস্বীরও হয়নি। কিন্তু যখন দলের নেতা-নেত্রীদের কাছে খোঁজ খবর নিয়ে খবরটা নিশ্চিত হল, তখন আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তেজস্বী। ঝাঁপিয়ে পড়েন টুইটারে। একাধিক টুইটে দলের প্রতি আনুগত্য, কৃতজ্ঞতা, প্রার্থী হওয়ার আনন্দ, উত্তেজনা সব কিছু মিলিয়ে লিখেছেন, ‘‘ওএমজি! ওএমজি! আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় দলের সভাপতি আমার মতো ২৮ বছরেরে এক যুবকের উপর উপর আস্থা রেখেছেন এবং বেঙ্গালুরু দক্ষিণের মতো হেভিওয়েট কেন্দ্রে প্রার্থীর দায়িত্ব দিয়েছেন... এটা শুধুমাত্র বিজেপিতেই সম্ভব। শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদীর নয়া ভারতেই সম্ভব।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কর্নাটকের বিজেপি বিধায়ক রবি সুব্রহ্মণ্যর ভাগ্নে তেজস্বী। তাঁর সঙ্গে আরএসএস এবং সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বলেই কর্নাটকের রাজনৈতিক শিবিরের দাবি। তা ছাড়া বক্তা হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে তেজস্বীর। মেরুকরণের রাজনীতি এখন থেকেই রপ্ত করে ফেলেছেন। কর্নাটক হাইকোর্টে আইনজীবীর কাজকর্মের পাশাপাশি অল্প বয়সেই অ্যারাইজ ইন্ডিয়া নামে একটি সংগঠন তৈরি করে অল্প বয়সেই সুনাম অর্জন করেছিলেন। তা ছাড়া বিজেপির কর্নাটকের আইটি সেলও তেজস্বীই দেখভাল করেন বলে খবর। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সব সূত্রেই টিকিট পেয়ে গিয়েছেন তেজস্বী। সারা দেশের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কনিষ্ঠ বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় দু’দশক পর এ বারও কংগ্রেসের প্রার্থী হচ্ছেন সেই বি কে হরিপ্রসাদ। ফলে অভিজ্ঞতা বনাম তারুণ্যের এই লড়াইয়ের উপর নজর থাকবে কর্নাটক তথা গোটা দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন