‘ন্যায়ের’ সঙ্গে টক্করে অস্ত্র ‘দেশপ্রেম’

বিজেপি নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় মানছেন, কংগ্রেসের এই প্রতিশ্রুতি ভোটের অভিমুখ অনেকটা বদলে দিতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৩
Share:

গত লোকসভা ভোটে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন মোদী। ছবি: এপি।

১৫ লক্ষ বনাম সাড়ে ৩ লক্ষের লড়াই শুরু হওয়ায় রাহুল গাঁধীর ইস্তাহারকে আক্রমণ শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সেনাপতিদের নিয়ে। চেষ্টা করলেন প্রচারের মোড় ফের দেশভক্তির দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে, সেনাবাহিনীর সম্মানের প্রসঙ্গ ব্যবহার করা হল বারবার।

Advertisement

গত লোকসভা ভোটে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন মোদী। দেননি। রাহুল বলছেন, ১৫ লক্ষ টাকা সম্ভব নয়। কিন্তু গরিবের ঘরে প্রতি বছরে ৭২ হাজার টাকা দেবে কংগ্রেস। পাঁচ বছরে তা হবে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। গত কাল কংগ্রেসের ইস্তাহার প্রকাশের সময়েও যে ‘ন্যায়’ প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি ছিল আলোচনার কেন্দ্রে।

বিজেপি নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় মানছেন, কংগ্রেসের এই প্রতিশ্রুতি ভোটের অভিমুখ অনেকটা বদলে দিতে পারে। এমনকি, বিজেপি সূত্রকে উদ্ধৃত করে অনেকে এমনও বলছেন, ‘ন্যায়’ প্রকল্পের ঘোষণার পর বিজেপির আসন সংখ্যা ৩০টির মতো কমতে পারে। দলের সমীক্ষাতেই না কি এমন ছবি উঠে এসেছে। বিজেপি অবশ্য এমন সমীক্ষার কথা অস্বীকার করছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহ থেকে কেন্দ্রের অন্য মন্ত্রীরা কংগ্রেসের ইস্তাহারকে নস্যাৎ করতে আজ যে ভাবে আসরে নামলেন, তাতে ইঙ্গিত, আশঙ্কা রয়েছে বিজেপি শিবিরে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত কালই ইস্তাহার প্রকাশের পরে অরুণ জেটলি অভিযোগ করেছিলেন, কংগ্রেসের ইস্তাহারে ‘টুকরে-টুকরে’ গোষ্ঠীর ছাপ স্পষ্ট। আজ অরুণাচলে প্রধানমন্ত্রীও বললেন, ‘‘বিচ্ছিন্নতাবাদ, হিংসাকে উৎসাহ দিচ্ছে কংগ্রেস। ভারতকে যাঁরা টুকরো করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে বাধা দিচ্ছে। দেশদ্রোহিতার আইন প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কংগ্রেসের প্রতারণাপত্র থেকে সতর্ক থাকা সব চৌকিদারের কাজ।’’

জম্মু-কাশ্মীরের প্রচারসভায় অমিত শাহও বিঁধলেন রাহুলকে। প্রশ্ন তুললেন, ‘‘রাহুল গাঁধী দেশদ্রোহিতার আইন খতম করে কাদের বাঁচাতে চাইছেন? ‘টুকরে-টুকরে’ গোষ্ঠীকে? ‘আফস্পা’ হঠিয়েই বা তারা সেনার মনোবল দুর্বল করতে চাইছে কেন?’’ জেটলিও আজ আবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে বলেন, ‘‘লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি এস হুডাকে দিয়ে রাহুল গাঁধী জাতীয় নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রিপোর্ট তৈরি করান। তাঁর সুপারিশ কি ইস্তাহারে রাখা হয়েছে? না কি তাঁকে দিয়ে রিপোর্ট তৈরি করা শুধুমাত্র লোক দেখানো?’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এখানেই থামেনি বিজেপি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকেও আজ দলীয় দফতরে এনে সাংবাদিকদের সামনে বসায় বিজেপি। নির্মলা সেখানে বলেন, ‘‘কংগ্রেস যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, ইস্তাহারে তা স্পষ্ট। রাহুল গাঁধী বলছিলেন, জওয়ানদের ‘শহিদ’এর মর্যাদা দেবেন। ইস্তাহারে তার উল্লেখমাত্র নেই।’’ কংগ্রেস নেতারাও বুঝছেন, ‘ন্যায়’ থেকে প্রচারের মোড় ঘোরাতে বিজেপি হইচই করছে। কালই দেশের ২২ শহরে দলের ইস্তাহার নিয়ে সভা করতে নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল। কংগ্রেস যে গরিবদের পাশে রয়েছে, তা তুলে ধরতে বলেছেন। কংগ্রেস যে সেনার পাশেও রয়েছে, তা-ও তুলে ধরতে হবে। কংগ্রেস সভাপতি নিজেই আজ ইস্তাহারের একটি অংশ টুইট করে বলেন, ‘‘প্রাক্তন ফৌজিরা ভারতের গর্ব। যোগ্য প্রাক্তন ফৌজিদের সিভিল সার্ভিসে প্রবেশের অধিকার দেবে কংগ্রেস। ৪০ বছরের নীচে জওয়ানেরা অবসর নিলে তাঁদের আধা সামরিকবাহিনীতে নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন