—ফাইল চিত্র।
টাকা দিয়ে ভোটের টিকিট পাওয়ার অভিযোগ বারবারই ওঠে এ দেশে। কিন্তু সেই অভিযোগ পিতার বিরুদ্ধে পুত্র তুলছেন— এমন নজির আছে কি না সন্দেহ। সেটাই ঘটল রাজধানীতে, ভোটের আগের দিনে।
পশ্চিম দিল্লি লোকসভা আসনে আম আদমি পার্টির প্রার্থী বলবীর সিংহ জাখরের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তাঁর ছেলে। উদয় জাখর নামে ওই তরুণের দাবি, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবালকে ৬ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর বাবা। সাংবাদিক বৈঠকে সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলবীর বলেছেন, উদয়ের সঙ্গে কার্যত তাঁর কোনও যোগাযোগই নেই। পুরোটাই মিথ্যে কথা।
একটি সংবাদ সংস্থাকে আজ উদয় বলেন, ‘‘বাবা মাত্র তিন মাস আগে রাজনীতিতে এসেছেন। তিনি অন্না হাজারের আন্দোলনেও ছিলেন না। কেন তাঁকে টিকিট দিল আপ? কারণ, অরবিন্দ কেজরীবাল এবং গোপাল রাইকে ৬ কোটি টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন তিনি। আমার কাছে পোক্ত প্রমাণ আছে যে, কেজরীবালকে তিনি ওই টাকা দিয়েছেন।’’ উদয়ের আরও অভিযোগ, পড়াশোনার জন্য টাকা চাইতে গেলেও বাবা তাঁকে দেননি। উল্টে বলেছিলেন, ওই টাকা তাঁর রাজনৈতিক কাজকর্মে লাগবে। এমনকি ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গায় অভিযুক্ত প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকেও বলবীর টাকা দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁর ছেলে। যাতে আপ-কংগ্রেস দুই শিবিরই পড়েছে কিছুটা অস্বস্তিতে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
উদয়ের অভিযোগের জবাব দিতে আপের সদর দফতরে আজ সাংবাদিক বৈঠক করেন বলবীর। অভিযোগের তীব্র নিন্দা করে বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে থেকেছেন বড়জোর ৬-৭ মাস। ছেলে জন্ম থেকেই তার মামার বাড়িতে আছে। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদের সময়ে আমার স্ত্রী ওর ভরপোষণের দায়িত্ব পেয়েছেন। আমার সঙ্গে ছেলের কথাই হয় খুব কম। প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারেও ওর সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি।’’
এই সাংবাদিক বৈঠক শুরুর মুখেই আপের সদর দফতরে ঢুকে আসেন তিন জন পুলিশ। সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করতে বলেন তাঁরা। আপ নেতারা গ্রাহ্য না-করায় ভিডিয়ো তুলতে যায় পুলিশ। তখন তাঁদের দরজার বাইরে রেখেই সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। এক অফিসার পরে বলেন, দিল্লিতে ভোটের আগে ৪৮ ঘণ্টার ‘সাইলেন্স পিরিয়ড’ চলছে। আদর্শ আচরণবিধি মোতাবেক এখন যে সাংবাদিক বৈঠক করা যায় না, সেটাই তাঁরা বলতে গিয়েছিলেন আপ নেতাদের। গোটা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। আপ নেতাদের দাবি, তাঁরা ওই সাংবাদিক বৈঠক করেছেন একটি অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে, ভোট চাইতে নয়। তাঁরা দলীয় প্রতীক ঢেকেও রেখেছেন। কিন্তু পুলিশ নির্বাচন কমিশনের কোনও নির্দেশের চিঠি দেখাতে পারেনি।
দিল্লি বিজেপি স্বাভাবিক ভাবেই উজ্জীবিত। দলের নেতা প্রবীণ খাণ্ডেলওয়াল নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে অভিযোগের তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, আপ কী ভাবে টিকি বিক্রি করে এবং টাকা ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করে— প্রার্থী-পুত্রের অভিযোগে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।