কমিশনে অভিযোগ কংগ্রেসের

ভোট দিলেন তিনি, নাটক চলল দিনভর

নিজের রাজ্য গুজরাতে ভোট দেওয়ার সময়েও তার ব্যতিক্রম হল না। গাঁধীনগরে ভোট দিতে গিয়ে আজ গোটা দিনটাতে একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতির জন্ম দিয়ে গেলেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৫
Share:

ভোট কেন্দ্রের বাইরে অমিত শাহের নাতনিকে কোলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রয়টার্স

তিনি নরেন্দ্র মোদী। কোনও কাজ করবেন আর তৈরি হবে না নাটক, এমন কথা জোর দিয়ে বলেন না তাঁর ঘনিষ্ঠরাও।

Advertisement

নিজের রাজ্য গুজরাতে ভোট দেওয়ার সময়েও তার ব্যতিক্রম হল না। গাঁধীনগরে ভোট দিতে গিয়ে আজ গোটা দিনটাতে একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতির জন্ম দিয়ে গেলেন মোদী। গুজরাতে তৃতীয় পর্বের ভোট প্রচার শেষ হয়ে গিয়েছিল আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেই। তবে ভোটের দিনটাও মোদী যে ভাবে নিজস্ব ভঙ্গিতে কাটালেন, সংবাদ মাধ্যমে ছুড়ে দিলেন মন্তব্য, সে সবই ডেকে এনেছে নতুন বিতর্ক। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে গিয়েছে কংগ্রেস।

গত কাল রাত কাটিয়েছেন গাঁধীনগরের রাজভবনে। আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠেই সেখান থেকে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান মোদী। যাত্রাপথেও নাটক। সঙ্গে মাত্র একটি গাড়িতে এসপিজি নিরাপত্তা নিয়ে হীরাবেনের কাছে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। মায়ের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথাবার্তায় মেতে যান মোদী। এমনকি, সেখানে শিশুদের সঙ্গে নিজস্বী তুলতেও দেখা যায় তাঁকে। এ ভাবে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন রানিপ এলাকার নিশান হাইস্কুলে ভোট দিতে পৌঁছন, তখন তিনি খোলা জিপে। তাঁকে দেখে রাস্তার দু’পাশে হাত নাড়ছেন সমর্থকেরা। জনতাকে দেখে হাত নাড়ান প্রধানমন্ত্রীও। বুথে ঢোকার আগে তখন তাঁর অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, গোটা পরিবারকে নিয়ে। আচমকাই অমিতের নাতনিকে কোলে তুলে নেন মোদী। অন্য হাতে তখন ভিকট্রি চিহ্ন। সমর্থকেরা চিৎকার করতে শুরু করেছে, মোদী, মোদী! ভোটের লাইনে গিয়ে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মোদী বুথে ঢুকে যাওয়ার পরেও সমর্থকদের উচ্ছ্বাস যেন থামতেই চায় না! বুথের ভিতরেও প্রধানমন্ত্রীর ভোটদান ঘিরে সংবাদ মাধ্যমের হুড়োহুড়ি। কিছু ক্ষণ পরে অমিতকে নিয়ে বুথ থেকে বেরিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এক মুখ হাসি। ভোটের কালি মাখানো আঙুল ক্যামেরার দিকে। ব্যাপারটা এখানেই শেষ হয়নি। বুথ থেকে বেরিয়ে বেশ কিছুটা পথ হেঁটে যান মোদী। রাস্তার ধারে জনতার উদ্দেশে হাত নাড়াতে থাকেন। গোটা ছবিটা যেন একটা রোড শো। বুথের বাইরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাতেও টেনে আনেন সন্ত্রাস প্রসঙ্গ। মোদীর মন্তব্য, ‘‘জঙ্গিদের অস্ত্র হল আইইডি। আর গণতন্ত্রের অস্ত্র, ভোটার আইডি। আমার বিশ্বাস, ভোটার আইডির শক্তি আইইডির থেকে অনেক বেশি।’’ মানুষ যাতে আরও বেশি সংখ্যায় ভোট দিতে বেরিয়ে আসেন, সেই আহ্বান জানান তিনি।

ব্যাপারটা হজম হয়নি কংগ্রেসের। বিকেলেই অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, জয়রাম রমেশের মতো নেতারা পৌঁছে যান নির্বাচন কমিশনে। ভোট দেওয়ার পরে মোদীর রোড শো আর সংবাদ মাধ্যমে তাঁর মন্তব্য নিয়ে আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ আনেন। সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হল। ভোট দেওয়ার পরে রোড শো করেছেন মোদী। রাজনৈতিক বক্তব্যও শুনিয়েছেন। এ সব করে ভোটের আচরণবিধি ভেঙেছেন তিনি। কমিশনকে বলেছি, শাস্তি হিসেবে মোদীর ৭২ ঘণ্টা প্রচার বন্ধ হোক।’’

মোদী অবশ্য গুজরাতেই থেমে থাকেননি। ভোটের প্রচার সারতে এর পরেই পৌঁছন ঝাড়খণ্ডে। সন্ধে সাতটা নাগাদ রাঁচীর হিনু চকের মুখে তাঁর রোড শোয়ের সময়ে রাস্তার দু’পাশের ব্যারিকেড ভেঙে পড়ার অবস্থা। গাড়িতে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়াচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রোড শোয়ের ভিড় দেখে বেজায় খুশি রাঁচীর বিজেপি কর্মকর্তারা। স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘এতটা ভিড় ইভিএমে ছাপ ফেললে আমাদের প্রার্থী সঞ্জয় শেঠ জিতবেনই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন